কলকাতা: কোভিডের (Covid 19) চিকিৎসায় অতিরিক্ত বিল সংক্রান্ত অভিযোগে শুধুমাত্র ক্ষতিপূরণের (Exgratia) নির্দেশই নয়। সময়ে ক্ষতিপূরণের টাকা না দিলে হাসপাতালকে দিতে হবে বিলের আট শতাংশ সুদও। এমনটাই নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য কমিশন (Health Commission)। কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে (Private Hospital) মৃত্যু হয় করোনা আক্রান্ত প্রৌঢ়ার। একাধিক হাসপাতালে তাকে নিয়ে ঘুরতে হয় বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, ডান হাতে গ্যাংরিং হয়ে যাওয়ায় বাদ দিতে হয় সেই হাত। এই ঘটনায় হাসপাতালকে ৫ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য কমিশন।
ট্যাংরার বাসিন্দা সৌরভ শর্মা অভিযোগটি দায়ের করেছিলেন। তিনি অভিযোগে জানান, তাঁর মা রেখা শর্মা তপসিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। গত এপ্রিল মাসের ঘটনা। তপসিয়ার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সময় ৫৪ বছরের প্রৌঢ়ার ডান হাতে গ্যাংরিং হয়ে যায়। যার প্রেক্ষিতে তাঁর মা’কে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন সৌরভ। আগের হাসপাতালে ঠিক মতো চিকিৎসা হয়নি বলেই অভিযোগ। রোগীর অন্যান্য অসুখ ছিল ঠিকই। তবে মৃত্যুর অন্যতম কারণ যে গ্যাংরিং, তেমনটাই অভিযোগ ছেলে সৌরভের।
অভিযোগ, প্রথমে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, মেরামতির কাজ হচ্ছে বলে জায়গা মেলেনি। দ্বিতীয় হাসপাতালে ভর্তি করা গেলেও চিকিৎসা ব্যবস্থা স্বাস্থ্য সম্মত নয় বলেই দাবি পরিবারের। পিপিই কিট ছাড়াই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছিল। কয়েকদিন চিকিৎসার পর দেখা যায় হাতে চ্যানেল করতে গিয়ে রোগীর এমন অবস্থা হয়েছে যে হাতে গ্যাংরিং হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা মিললেও শেষ পর্যন্ত রোগীর মৃত্যু হয়। হাতের গ্যাংরিন মৃত্যুর অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।
শুনানি শেষে স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান শুক্রবার জানান, সল্টলেকের হাসপাতালের ওই প্রৌঢ়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি পর্যবেক্ষণ করে তাঁরা দেখেছেন। কোভিড আক্রান্ত প্রৌঢ়ার অন্য অসুখ থাকলেও তাঁর মৃত্যুর একটি কারণ যে গ্যাংরিং তা অস্বীকার করা যায় না বলে জানিয়েছে কমিশন। প্রৌঢ়া সুস্থ হলেও তাঁর ডান হাত কেটে বাদ দিতে হত বলে মত স্বাস্থ্য কমিশনের।
এই ঘটনায় ৫ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেয় কমিশন। ২ লক্ষ টাকা বিল ও তার সঙ্গে আরও ৩ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা দিতে বলা হয়েছে। হাসপাতালের অনুরোধে ১০ দিনের মধ্যে রোগীর পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে টাকা না মেটালে আট শতাংশ হারে সুদ দেওয়ার কথা বলেছেন কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ছাড়া এদিন আরও সাতটি অতিরিক্ত বিল সংক্রান্ত মামলায় মোট ৩ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা ফেরৎ দিতে বলেছে কমিশন।