কলকাতা: এখনও অবধি ডায়ারিয়াতে দু’জনেরই মৃত্যু হয়েছে কামারহাটিতে। বাকি দুই মৃত্যুর সঙ্গে এই রোগের কোনও যোগ নেই বলেই জানিয়ে দিল স্বাস্থ্য দফতর। সংশ্লিষ্ট দফতরের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, দু’টি মৃত্যু ডায়ারিয়ার (Diarrhoea) কারণে। তবে আরও যে দু’টি মৃত্যু হয়েছে তার সঙ্গে ডায়ারিয়ার যোগ নেই। একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, বুধবার পর্যন্ত সুডার (SUDA) রিপোর্ট অনুযায়ী, কামারহাটিতে ডায়ারিয়া আক্রান্ত হয়েছেন ১৬০। সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ৭৬ জন। কামারহাটি ইএসআইয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৪০ জন।
কামারহাটির ডায়ারিয়া পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার একটি বিবৃতি জারি করেন স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। তিনি জানান, জেলা প্রশাসন ও পুরসভার কর্মীদের এ নিয়ে সজাগ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা সবরকম খোঁজ খবর নিচ্ছে। প্রয়োজনীয় পরামর্শ থেকে প্রাথমিক পথ্য, ওআরএসের প্যাকেট দেওয়া হচ্ছে। জলের রিজারভারগুলি পরিষ্কারের পাশাপাশি এলাকায় স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে। সকাল ছ’টা থেকে সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত মেডিক্যাল অফিসার, প্যারামেডিক্যাল কর্মীরা এলাকায় থেকে মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। ন’ জনের নমুমা নাইসেডে (NICED) পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটিতে ডায়ারিয়ার প্রকোপের বিষয়টি সামনে আসে। অভিযোগ ওঠে, জলবাহিত এই সংক্রমণে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। পরে এই সংখ্যাটা বেড়ে চার হয় বলেও শোনা যায়। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, বাকি দুই মৃত্যু হয়েছে ঠিকই। তবে তার সঙ্গে ডায়ারিয়ার কোনও যোগ নেই।
কামারহাটি পুরসভা সূত্রে খবর, জল থেকে সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলেই অনুমান করা হচ্ছে। পুর এলাকার ১,২,৩, ৪, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুরসভার তরফে নল বাহিত জল খেতে নিষেধ করা হয়েছে পুরসভার তরফে। জলের নমুনা পরীক্ষা করার জন্য পাঠানো হয়েছে।
চলতি মাসে আচমকাই ডায়ারিয়ার প্রকোপ বাড়ে কামারহাটি পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। মৃত্যু হয় দু’জনের। সে সময় আরও ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। প্রাথমিক ভাবে প্রায় ৬৮ জন ডায়ারিয়া আক্রান্ত হয়ে সাগর দত্ত হাসপাতালে চিকিত্সাধীন ছিলেন। পরে তা বাড়তে শুরু করে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বর্ষা হলেই জল জমে যায় এলাকায়। প্রবল বৃষ্টিপাতে জল যন্ত্রণার সঙ্গে বাড়ে পেটের অসুখও। এই বৃষ্টির কারণেই কোনওভাবে পানীয় জলেও ডায়ারিয়ার জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে মনে করছেন এলাকার মানুষ। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। সংক্রমণ যাতে আর বাড়তে না পারে তার জন্য পুরসভার তরফেও সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
আগেই কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র জানিয়েছিলেন, “কামারহাটিতে স্বাস্থ্যদফতরের নির্দেশে বিশেষজ্ঞ দল পৌঁছেছে। আমাদের দলের স্বেচ্ছাসেবকরা তৈরি রয়েছেন। আমার বাড়ির ল্যান্ডলাইন নম্বর হেল্পলাইন হিসেবে খুলে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক মুহূর্তে আমাদের দলের কর্মীরা কাজ করছেন। আশা করছি দ্রুত এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।” আরও পড়ুন: যে মুখে বিষ ঢেলেছিলেন, আজ শুধু চাইছেন ‘জল’, এই প্রথম মাকে দেখলেন অমৃত