কলকাতা : পুজোর পর থেকে রাজ্যে উর্ধ্বমুখী করোনার গ্রাফ। কখনও ৮০০, কখনও ৯০০ ছাড়িয়ে যাচ্ছে দৈনিক করোনা আক্রান্তের (Covid Cases) সংখ্যা। পরিস্থিতি নিয়ে আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকেরা। এবার এই ইস্যুতে রাজ্যের কাছে এল কেন্দ্রের চিঠি। গোটা রাজ্যের করোনা (Covid 19) পরিস্থিতি নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে সেই চিঠিতে। তবে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে কলকাতার কথা। চিঠিতে স্পষ্ট লেখা হয়েছে, কলকাতা (Kolkata) উদ্বেগের অন্যতম কারণ। পরিসংখ্যান নিয়ে বোঝানো হয়েছে, উদ্বেগের কারণটা ঠিক কেন।
আজ মঙ্গলবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ। আগেও কোভিড সংক্রান্ত নানা নির্দেশিকা নিয়ে চিঠি এসেছে রাজ্যের কাছে। তবে, এবার নজিরবিহীনভাবে সেই চিঠিতে দেওয়া হয়েছে রেখচিত্র। সেখানে বোঝানো হয়েছে গত এক মাস ধরে কী ভাবে এ রাজ্যে বেড়েছে সংক্রমণ।
চিঠিতে পরিসংখ্যান দিয়ে বলা হয়েছে, গত এক মাসে এ রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার ৯৩৬ ও ৩০ দিনে মৃত্যু হয়েছে ৩৪৩ জনের। আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতের মোট করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৩.৪ শতাংশ, মৃতের সংখ্যা বেড়েছে ৪.৭ শতাংশ। সংক্রমণের হার যে উদ্বেগজনক, তা স্পষ্ট বলা হয়েছে চিঠিতে। সাপ্তাহিক সংক্রমণের হিসেবও তুলে ধরেছে কেন্দ্র।
এই প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দলুই বলেন, পুজোর মধ্যে মানুষের মধ্যে কোভিড বিধি পালনের অনীহা দেখা গিয়েছে। তারপর উত্তরোত্তর যে ভাবে সংক্রমণ বাড়ছে, তা অবশ্যই উদ্বেগের। পরিস্থিতি যাতে হাতের বাইরে বেরিয়ে না যায়, সেই চেষ্টা করতে হবে।
জুলাই মাসের শেষের দিক থেকেই দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৮০০-র নীচে নামতে শুরু করে। কিন্তু এবার ফের চোখ রাঙাচ্ছে সংক্রমণ। কলকাতাপ পাশাপাশি দুই ২৪ পরগনার ছবিটাও আশঙ্কার।
গত সপ্তাহেই নবান্নে জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সব জেলার জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারদের সেই বৈঠকে অংশ নিতে বলা হয়। নবান্ন থেকে ভার্চুয়ালি হয় সেই বৈঠক। প্রয়োজন অনুযায়ী কনটেনমেন্ট জোন তৈরি করতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাত্রিকালীন বিধিনিষেধ কঠোরভাবে পালন করার কথাও বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৬ জন আক্রান্তের খোঁজ মিলতেই গৃহবন্দি ৪০ লক্ষ বাসিন্দা! করোনা রুখতে ‘অতি তৎপর’ চিনা প্রশাসন
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে করোনার দুটো টিকা নেওয়ার পরেও করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন কেউ কেউ। এটা যথেষ্ট উদ্বেগ বাড়াচ্ছে সরকারের। তাই মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন তৈরির বিষয়ে জোর দিতে বলেছেন মুখ্যসচিব। পাশাপাশি তিনটে টি অর্থাৎ টেস্টিং, ট্র্যাকিং ও ট্রিটমেন্টের দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: নভেম্বর থেকে গুটখা ও পান মশলা বিক্রি নিষিদ্ধ রাজ্যে, নির্দেশিকা জারি নবান্নের