কলকাতা : করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি এখনও। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কিছু কমলেও, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের মধ্যে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলা। মৃতের সংখ্যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে এ রাজ্যের বিশেষজ্ঞদের। এবার তাই সংক্রমণে লাগাম দিতে বিশেষ উদ্যোগ নিল কলকাতা পুরনিগম। যাঁরা এখনও ভ্যাকসিন নেননি, তাঁদের বাড়িতে গিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হল পুরনিগমের তরফে।
এমন অনেকেই আছেন যাঁরা অসুস্থতার কারণে কোনও টিকাকরণ কেন্দ্রে গিয়ে ভ্যাকসিন নিতে পারেননি। আবার অনেকে কো-মর্বিডিটি থাকায় সংক্রমণের ভয়ে টিকা নিতে যাননি। ফলে তাঁদের সংক্রমণের ভয় অনেকটাই বেশি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই এই বিশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার সেই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন কলকাতা পুরনিগমের মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
এ ক্ষেত্রে বয়সের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। যে কোনও বয়সের পুরুষ বা মহিলা এই টিকাকরণের সুযোগ পাবেন। ফিরহাদ হাকিমের ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দেওয়া হয়েছে। সেখানেই হোয়াটসঅ্যাপ করে টিকার জন্য আবেদন জানাতে হবে। ফিরহাদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর ৯৮৩০০৩৭৪৯৩। এই নম্বরে নিজেদের আধার কার্ড, নাম ও ফোন নম্বর দিয়ে এসএমএস করতে হবে। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী বা আধিকারিকরা তাঁদের বাড়ি গিয়ে ভ্যাকসিন দেবেন।
এতদিন পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য দফতররে অনুমোদন ছিল না। কিন্তু, তৃতীয় ঢেউ যখন আঘাত করেছে, তখনই তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সম্প্রতি রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে অনেকেই ভ্যাকসিন নেননি। এই তথ্য সামনে আসতেই এই বিশেষ পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও অনেকেরই করোনা হয়েছে ঠিকই, তবে সে ক্ষেত্রে মৃত্যুর সম্ভাবনা অনেক কম থাকে বলেই দাবি গবেষকদের। তাই ভ্যাকসিন নেওয়া জরুরি বলেই বারবার সতর্ক করছেন চিকিৎসকেরা। আর গত কয়েকদিনে রাজ্যে যে ছবি উঠে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।
রবিবার দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৪ হাজারের কিছু বেশি। তবে, একদিনে মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের। শুধু তাই নয়, শনিবারের বুলেটিন অনুসারে একদিনে মৃতের সংখ্যা ছিল ৩৯ ও শুক্রবার সংখ্যাটা ছিল ২৮। গত ৩ সপ্তাহে রাজ্যে মোট ৩৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে শিশুও। টিকাকরণের সংখ্যা বাড়লে মৃতের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।