কলকাতা: মুকুল রায়ের (Mukul Roy) দলত্যাগ-শুনানি আপাতত বিধানসভায় হবে না। যতক্ষণ না সুপ্রিম কোর্ট কোনও নির্দেশ দিচ্ছে। গোটা বিষয়টিই বিচারাধীন। শুক্রবার এমনটাই জানালেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন মুকুল রায়ের দলত্যাগ নিয়ে শুনানির জন্য বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায় আইনজীবীদের নিয়ে অধ্যক্ষের কাছে গিয়েছিলেন। তখনই অম্বিকা রায়-সহ বাকি আইনজীবীদের অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এলেই তাঁরা পরবর্তী পদক্ষেপ করবে। তার আগে বিধানসভায় এই দলত্যাগের অভিযোগের কোনও শুনানি হবে না।
অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, যেহেতু বিষয়টি দেশের সর্বোচ্চ আদালতে গিয়েছে। তাই সেখান থেকে কোনও নির্দেশ না আসা পর্যন্ত বিধানসভায় কোনও পদক্ষেপ করা সম্ভব নয়। ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিধানসভায় কোনও শুনানি হবে না।
প্রথা ভেঙে মুকুল রায়কে বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি বা পিএসি-র চেয়ারম্যান করা হয়েছে। এই অভিযোগে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। এই ইস্যুতে রাজ্য রাজনীতি যথেষ্ট সরগরম হয়েছে। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় মুকুলের নাম ঘোষণা করার পর রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে নালিশ করতে যায় শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি পরিষদীয় দল। এমনকী মুকুল রায় এখনও এই পদে থাকায়, পিএসির বৈঠক থেকেও মুখ ফেরায় বিজেপি। পাশাপাশি হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়।
বিধানসভার রুল বুক-এর ৩০২ ধারা অনুযায়ী, আনুপাতিক হারে পিএসি কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়। এখানে সেই বিধি মানা হয়নি বলে বিজেপি’র অভিযোগ। নিয়ম অনুযায়ী, ১৪:৬ অনুপাতে কমিটির সদস্য নিবার্চন হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ১৩:৭ অনুপাতে করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, “সরকারের যেমন খরচ করার অধিকার রয়েছে, তেমনই বিরোধীদেরও অধিকার রয়েছে সেই খরচের খতিয়ান খতিয়ে দেখার। সেই মতো রাজ্যের খরচ খতিয়ে দেখে বিরোধীরা। কিন্তু এই প্রথম কোনও গণতন্ত্রে বিরোধীদের এমনটা হচ্ছে, যেখানে বিরোধীদের পক্ষ থেকে পিএসির চেয়ারম্যান করা হচ্ছে না।”
এরই মধ্যে গত ২৮ সেপ্টেম্বর কলকাটা হাইকোর্ট জানায়, বিধায়ক মুকুল রায়কে পিএসি চেয়ারম্যান রাখা হবে কি হবে না সে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ৭ অক্টোবরের মধ্যে বিধানসভার স্পিকারকে এই সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু তার ঠিক দু’দিন আগে এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন বিধানসভার অধ্যক্ষ।
কলকাতা হাইকোর্টের গত ২৮ সেপ্টেম্বরের শুনানিতে বলা হয়েছিল ৭ অক্টোবরের মধ্যে বিধানসভার অধ্যক্ষ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নিলে পদক্ষেপ করবে কলকাতা হাইকোর্ট। এই সিদ্ধান্তকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতে মামলা করেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: সিতাইকাণ্ডকে সামনে রেখেই বিএসএফের এক্তিয়ার নিয়ে প্রস্তাব আনা হচ্ছে বিধানসভায়