কলকাতা: বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে তালা ঝোলানো হয়েছিল যোগেশ চন্দ্র চৌধুরী ল কলেজের অধ্যক্ষের ঘরে। এবার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে তালা খোলা হবে সেই ঘরের। অধ্যক্ষকে অপসারণের নির্দেশেও স্থগিতাদেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। অর্থাৎ ওই ল কলেজের অধ্যক্ষ পদে বহাল থাকছেন সুনন্দা ভট্টাচার্য গোয়েঙ্কা। তাঁকে এত দ্রুত সরিয়ে দেওয়া কোনও কারণ খুঁজে পায়নি ডিভিশন বেঞ্চ। তবে তাঁর যোগ্যতা কী, সেই হলফনামা জমা দিতে হবে সিঙ্গল বেঞ্চেই। সে ক্ষেত্রে বহাল থাকছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ।
যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও অধ্যক্ষ হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল সুনন্দা গোয়েঙ্কার নামে। ওই মামলায় একই অভিযোগ ছিল ওই ল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে। শুনানির পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, মানিক ভট্টাচার্য অধ্যক্ষ হিসেবে যে বেতন পেয়েছিলেন, তা ফেরত দিতে হবে। সেই সঙ্গে রাতারাতি বর্তমান অধ্যক্ষ সুনন্দা গোয়েঙ্কাকে সরানোর নির্দেশও দিয়েছিল আদালত। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে ওই দিন রাতেই কলেজের অধ্যক্ষের ঘরে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর এক অধ্যাপক অচিনা কুণ্ডুকেও অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পরে সুনন্দা গোয়েঙ্কা সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন।
বুধবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, সুনন্দা গোয়েঙ্কা ও অচিনা কুণ্ডুকে আগামিকাল, বৃহস্পতিবার কলেজে উপস্থিত থাকতে হবে। সকাল ১০ টায় অধ্যক্ষের ঘরের তালা খুলে তাদের প্রবেশ করতে সাহায্য করবেন আদালত নিযুক্ত স্পেশাল অফিসার অর্ক নাগ। ওই সময় উপস্থিত থাকবেন চারু মার্কেট থানার অফিসাররা। কোনওভাবেই যাতে বাধা না দেওয়া হয়, সেই নির্দেশই দেওয়া হয়েছে। আগামী শুক্রবার স্পেশাল অফিসার রিপোর্ট দিয়ে জানাবেন নির্দেশ পালন হয়েছে কি না।
মামলাকারীর দাবি ছিল, টেলিফোনের বিচারপতি জানতে চেয়েছিলেন তাঁর যোগ্যতা সম্পর্কে। টেলিফোনের বক্তব্য কি আইনত বৈধ? সেই প্রশ্ন উঠেছে। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, “শুধু বিচার নয়, তার উপলক্ষও সামনে থাকা দরকার। শুধুমাত্র টেলিফোনের মাধ্যমে এই নির্দেশ দেওয়া যায় না। অভিযুক্তকে বলার সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন ছিল।” অধ্যক্ষ অপসারিত হয়েছেন, অথচ তাঁকে কেন কোনও নোটিস দেওয়া হল না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ডিভিশন বেঞ্চ। তবে মূল মামলায় শুনবেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
এদিন অচিনা কুণ্ডুর আইনজীবী জানিয়েছেন, অধ্যাপিকার স্বামী অসুস্থ থাকায় গত ৩১ অগস্ট অচিনা পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দেন। কেন মামলায় নতুন করে তাঁর নাম আনা হল, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।