কলকাতা: ঝালদা পুরসভায় (Jahlad Municipality) চেয়ারম্যান বা পুরপিতা নির্বাচনের জন্য গত ৩ ডিসেম্বর দিনটি ধার্য করা হয়েছিল। কিন্তু সেই দিন আসার আগেই ওই পুরসভায় প্রশাসক বসিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা করেছিলেন ওই পুরসভার এক কংগ্রেস কাউন্সিলর। সেই মামলায় এবার কার্যত ধাক্কা খেল রাজ্য। প্রশাসক বসানোর সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল আদালত। সোমবার বিচারপতি অমৃতা সিনহা অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সেই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে। পুরসভার এই ইস্যুতে রাজ্য কেন হস্তক্ষেপ করল, তা জানতে চেয়েছেন বিচারপতি। পাশাপাশি, পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান কার কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন, সে কথাও জানতে চেয়েছেন বিচারপতি। সব পক্ষের হলফনামা তলব করা হয়েছে।
সোমবার বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, প্রশাসক নয়, পুরসভার দ্বায়িত্ব সামলাবেন জেলাশাসক। বিচারপতি মন্তব্য করেছেন, নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচনের দিন ধার্য করার দায়িত্ব থাকে ভাইস চেয়ারম্যানের। চেয়ারম্যান অপসারিত হওয়ার ৭ দিনের মধ্যে তাঁর এই কাজ করার কথা বলেও উল্লেখ করেছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
গত ২১ নভেম্বর আস্থাভোটের মাধ্যমে চেয়ারম্যানকে অপসারণ করেছেন ওই পুরসভার বিরোধী কাউন্সিলররা। সাতদিনের মধ্যেই ভাইস চেয়ারম্যানের পদক্ষেপ করার কথা ছিল। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী ভাইস চেয়ারম্যান পদক্ষেপ না করলে তিনজন কাউন্সিলর পদক্ষেপ করতে পারে। ২৯ নভেম্বর তিন বিরোধী কাউন্সিলর চেয়ারম্যান নির্বাচনের সভা ডাকেন। ৩ ডিসেম্বর চেয়ারম্যান নির্বাচনের দিন ধার্য হয়। তার আগেই ২ ডিসেম্বর প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। নগরোন্নয়ন দফতরের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রশাসক বসানোর কথা বলা হয়। সরকারের সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হন কংগ্রেস কাউন্সিলর শীলা চট্টোপাধ্যায়।
সেই মামলায় এবার স্থগিতাদেশ দেওয়া হল।
রাজ্য কীভাবে এই প্রক্রিয়ার মধ্যে হস্তক্ষেপ করে? প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি। রাজ্য জানিয়েছে, সরকার দেখেছে যে শূন্যপদ রয়েছে, তাই হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। প্রশাসক ইতিমধ্যেই দ্বায়িত্ব নিয়েছেন বলে জানিয়েছে রাজ্য।
আদালতে জানানো হয়েছে ভাইস চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেন ২৮ নভেম্বর। সেই পগত্যাগ পত্র গৃহীত হল কি না, সে বিষয়ে ২ ডিসেম্বরের নির্দেশিকায় কোনও উল্লেখ নেই বলে এদিন মন্তব্য করেছেন বিচারপতি। ঝালদা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান কার কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন? রাজ্যকে প্রশ্ন করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। সরকারি আইনজীবী জানান, তিনি পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু কার কাছে সেটা জানা নেই। আদালতে ভাইস চেয়ারম্যান জানান, ২৮ নভেম্বর মহকুমা শাসকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি, ২৯ নভেম্বর তাঁর পদত্যাগ গৃহীত হয়েছে বলে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন মহকুমা শাসক।