কলকাতা: চারতলা আবাসনটা যে এভাবে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়বে তা গুণাক্ষরেও ভাবতে পারেননি কেউ। কিন্তু, চোখের সামনেই কয়েক পলকের মধ্যে হেলে গেল বাঘাযতীনের আস্ত চারতলার আবাসনটা। ব্যাস! সেই শুরু! প্রশ্নের মুখে শহরের বেআইনি নির্মাণ। চাপানউতোর চলছে রাজনৈতিক মহলে। পুলিশ এখনও খুঁজছে প্রোমোটারকে। শাসকদলের বিরুদ্ধে লাগাতার তোপ দাগতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। বাঘাযতীনের যে চারতলা আবাসনটি ভেঙে পড়েছে সেখানেই থাকতেন রূপা চৌধুরী। ২০১৩ সালে ২২ লাখ টাকা দিয়ে ফ্ল্যাটটি কিনেছিলেন। সাজানো গোছানো ছিমছাম আকর্ষণীয় ফ্ল্যাটটি দেখে ভাবতেও পারেননি কোনওদিন আস্ত আবাসনই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়তে পারে। ঘর হারিয়ে মাথায় হাত গোটা পরিবারের।
স্বামী, ছেলে এবং অসুস্থ পিসেমশাইকে নিয়ে সংসার রূপা দেবীর। আবাসনের অবস্থা যে ভাল নেই তা বেশ কয়েক মাস ধরেই টের পাচ্ছিলেন বাসিন্দারা। ধীরে ধীরে যে সেটি একদিকে হেল পড়ছে তাও স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছিল। প্রোমোটারকে জানানো হয়েছিল সে কথা। রূপা দেবী বলছেন, প্রোমোটার জানিয়েছিলেন দ্রুত সারিয়ে দেওয়া হবে বাড়ি। কিন্তু সেই বাড়িই যে এভাবে ভেঙে পড়বে ভাবতে পারছেন না তাঁরা।
রূপ দেবী বলছেন, মেরামতির তোড়জোড় শুরু হতেই তাঁরা প্রায় মাস খানেক আগে ভাড়া বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু, মঙ্গলবার দুপুরে খবরটা কানে যেতেই মাথায় কার্যত আকাশ ভেঙে পড়ে চৌধুরী পরিবারের। এক নিমেষেই যেন পায়ের তলা থেকে সরে গিয়েছিল মাটি।
খবর শুনে ছুটে যান ফ্লাটের সামনে রূপা দেবী। মাথার উপর থেকে ছাদ সরে গেল কীভাবে ছোট বাচ্চা, অসুস্থ পিসেমশাইকে নিয়ে কোথায় যাবেন তা ভেবেই কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছেন না তাঁরা। ভাড়া বাড়ির খরচই বা কতদিন দেওয়া সম্ভব তা নিয়েও বেড়েছে চিন্তা। টিভি ৯ বাংলার ক্যামেরার সামনে এ কথা বলতে বলতেই কার্যত কেঁদেই ফেললেন রূপা দেবী। এদিকে ঘটনার পর থেকেই প্রোমোটারকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কোথায় যাবেন এইখানে থাকা ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা? তাদের দায় কারা নেবেন? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। এদিকে রূপা দেবী বলছেন, তাঁরা যখন ফ্ল্যাটটা কিনেছিলেন তখন জানতেন না যে এই ফ্ল্যাট বেআইনি। তারা তো ফ্ল্যাটের ট্যাক্সও দেন। তাহলে বেআইনি হল কীভাবে? তুলছেন প্রশ্ন।