AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

TMC: ভোট বৈতরণী পেরতে তৃণমূলের নতুন ‘হাতিয়ার’, কীভাবে কাজ করছেন ডিজিটাল যোদ্ধারা?

TMC Digital Joddha: ডিজিটাল যোদ্ধাদের ময়দানে নামিয়ে এবার “তরুণ প্রজন্ম”-কে নিজেদের দিকে টানতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এসআইআর- র মাধ্যমে এনআরসি করানোর চক্রান্তের যে দাবি শাসকদলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরের নেতারা বলছেন, সেটাই ডিজিটাল যোদ্ধাদের দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করাচ্ছে তৃণমূল।

TMC: ভোট বৈতরণী পেরতে তৃণমূলের নতুন 'হাতিয়ার', কীভাবে কাজ করছেন ডিজিটাল যোদ্ধারা?
সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূলের নতুন হাতিয়ার ডিজিটাল যোদ্ধাImage Credit: Social Media
| Edited By: | Updated on: Nov 10, 2025 | 7:12 PM
Share

কলকাতা: আর মাস ছয়েক পরে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় আসতে পারবে তৃণমূল কংগ্রেস? এই নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, ছাব্বিশের নির্বাচনে তৃণমূলের প্রচারের নতুন ‘হাতিয়ার’ হয়ে উঠছে ‘আমি বাংলার ডিজিটাল যোদ্ধা’সমর্থক ও কর্পোরেট ধাঁচে প্রশিক্ষিত তরুণ ব্রিগেড বাহিনী ‘ডিজিটাল যোদ্ধা’-র জোড়া ফলক নিয়েই ছাব্বিশের ভোটের বৈতরণী পেরতে চাইছে তৃণমূল। রাজনৈতিক মহলের একাংশের এটাই ব‍্যাখ‍্যা।

কেন হঠাৎ ‘ডিজিটাল যোদ্ধার’ গুরুত্ব বাড়ছে তৃণমূলে? রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরে আইপ‍্যাক তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটের রণকৌশল ঠিক করে এলেও পথে নেমে প্রচার চালিয়েছেন নেতা- কর্মী- সমর্থকরা। প্রবীণ – নবীনদের নিয়ে নিজের মতো করে রাস্তায় নেমে প্রচার করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নবজোয়ারের মাধ‍্যমে টানা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছেছেন।

কিন্তু এ বার নতুনত্ব এসেছে শাসকদলের প্রচারে কিংবা বিরোধীদের সমালোচনার জবাব দিতে। আর হাতিয়ার হিসাবে তৃণমূলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি ডিজিটাল যোদ্ধাদের ময়দানে নামানো হয়েছে। অর্থাৎ জোড়া ফলক ময়দানে নেমেছে। কাজও করতে শুরু করে দিয়েছে জোড়া ফলক। বিশেষ করে এসআইআর আবহে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে, আতঙ্ক দূর করতে এবং অবশ‍্যই এসআইআর আসলে কেন প্রয়োগ করা হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিতে নিরন্তন কাজে নেমে পড়েছেন ডিজিটাল যোদ্ধারা।

এসআইআরের নামে পশ্চিমবঙ্গের বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া যাবে না জানিয়ে বারবার সরব হয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায। গত ২৭ অক্টোবর জাতীয় নির্বাচন কমিশন এসআইআর চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে। তার আগে থেকেই অবশ্য এসআইআর নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর বাড়তে থাকে। সেই আবহে গত ১৬ অক্টোবর অভিষেক বন্দ‍্যোপাধ‍্যায় ‘আমি বাংলার ডিজিটাল যোদ্ধা’-র ঘোষণা করেন। ক‍য়েক দিনের মধ‍্যেই ডিজিটাল যোদ্ধার সংখ‍্যা ৪ লক্ষ ছাড়িয়ে ৫ লক্ষের দিকে এগিয়ে গিয়েছে। আইপ‍্যাকের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকেই তৈরি। তার প্রমাণ ৪ নভেম্বরের মিছিল।

গত ৪ নভেম্বর মহামিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল কলকাতা শহরে। বিআর আম্বেদকরের মূর্তির পাদদেশ থেকে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত মিছিলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি পা মিলিয়েছিলেন প্রচুর তৃণমূল সমর্থক। আর ছিলেন কয়েক হাজার ডিজিটাল যোদ্ধা। প্রায় ৩.৮ কিলোমিটার রাস্তা ধরে মিছিল যখন এগিয়ে চলেছে, তার বিভিন্ন মুহূর্তের ভিডিয়ো তুলে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে গিয়েছেন ডিজিটাল যোদ্ধারা। বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশন এসআইআর -র নামে এনআরসি লাগু করে বাংলার মানুষকে “বাংলাদেশি” তকমা দেওয়ার চক্রান্ত করে চলেছে বলে বারবারই তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সরব হয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তৃণমূল সুপ্রিমো এবং দলের সেকেন্ড ইন কম‍্যান্ডের সেই বক্তব্যকে সারা বাংলার মানুষ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই সে দিন রাস্তায় নেমেছিলেন ডিজিটাল যোদ্ধারা। আর অফিসে বসে বাকি যোদ্ধারা বিরোধীদের আক্রমণের জবাব দিয়ে গিয়েছেন।

রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, গত পঞ্চায়েত এবং লোকসভা ভোটের ক্ষেত্রে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-কে হাতিয়ার করে মহিলা ভোটব্যাঙ্ক নিজেদের দিকে টেনেছে তৃণমূল। এর পুরো সুবিধা পেয়েছে রাজ্যের শাসকদল। গ্রামীণ মানুষও শাসকদলের পক্ষেই ভোট দিয়েছিলেন। বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের ভোটব্যাঙ্কে খুব একটা বড় সুবিধা করতে পারেনি বিজেপি।

কিন্তু শহুরে তরুণ প্রজন্মকে শাসকদলমুখী করাটা বেশ চ‍্যালেঞ্জ ছিল শাসকদলের কাছে। কিন্তু ডিজিটাল যোদ্ধাদের ময়দানে নামিয়ে এবার “তরুণ প্রজন্ম”-কে নিজেদের দিকে টানতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এসআইআর- র মাধ্যমে এনআরসি করানোর চক্রান্তের যে দাবি শাসকদলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরের নেতারা বলছেন, সেটাই ডিজিটাল যোদ্ধাদের দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করাচ্ছে তৃণমূল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, শুধু গ্রামীণ ভোটার দিয়ে আর জিততে চায় না তৃণমূল। বিশেষ করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই তরুণ প্রজন্মের হয়ে মুখ খুলেছেন। কর্পোরেট ধাঁচে তরুণ প্রজন্মকে যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে মাঠে নামাতে চেয়েছেন। আবার তরুণ প্রজন্মের ভোট নিজেদের দিকে টানতে চেয়েছেন। আর সেই কারণেই এ বারে সাধারণ তৃণমূল সমর্থকদের পাশাপাশি কর্পোরেট ধাঁচে আইপ‍্যাকের প্রশিক্ষিত ডিজিটাল যোদ্ধারাও মাঠে নেমে পড়েছেন ২০২৬ -র ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচারে। আবার তৃণমূলের নেতাদের কথায়, তৃণমূলের বিজয়ে তরুণ প্রজন্মের আরও যোগদানকে কাজে লাগাতেই ডিজিটাল যোদ্ধাদের কাজে নামিয়েছেন অভিষেক।