কলকাতা: রাত পোহালেই একুশে জুলাই। এদিকে শনিবার সকাল থেকেই শহর কলকাতায় হু হু করে কমে গিয়েছে বাসের সংখ্যা। হাওড়া স্টেশন থেকে শিয়ালদহ স্টেশন, থিকথিক করছে ভিড়। উত্তরবঙ্গ থেকে আসছেন কাতারে কাতারে তৃণমূল সমর্থক। দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতেও একই ছবি। রাস্তায় অমিল বাস। চূড়ান্ত দুর্ভোগের মুখে যাত্রীরা। এ ভোগান্তি একদিনের জন্য সামাল দেওয়া গেলেও দমকল থেকে অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে কী হবে? শহর কলকাতায় প্রায় ৯ বড় রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ করতে চলেছে কলকাতা পুলিশ। কিন্তু, আপদকালীন পরিষেবার ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে কলকাতা পুলিশের কর্তারা? প্রশ্নটা ঘুরছে আম-আদমির মনে। আমরা যোগাযোগ করেছিলাম লালবাজার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল বিভাগের সঙ্গে। সমস্যা সমাধানের পথও বাতলালেন এক পুলিশ কর্তা। কিন্তু তার পরেও যে সিঁদুরে মেঘ কাটল এমনটা কিন্তু এখনই বলা যাচ্ছে না।
প্রতিবারের মতো শহর কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলায় হয়েছে সভার আয়োজন। ডোরিনা ক্রসিংয়ে যে জায়গায় এই মঞ্চ তৈরি হয়েছে তার ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে রয়েছে শহরের ৩ গুরুত্বপূর্ণ বড় হাসপাতাল। কলকাতা মেডিকেল কলেজ, এসএসকেএম, এনআরএস। শুধু কলকাতা নয়, গোটা রাজ্য তো বটেই এমনকী দেশের বাইরে থেকেও বহু মানুষ প্রত্যহ চিকিৎসা করাতে আসেন এখানে। সব সময়েই লেগে থাকে ভিড়। সেখানে ২১ জুলাই লাখ লাখ মানুষের ভিড়ে যদিও আটকে যান কোনও মুুমুর্ষ রোগী, এগোতে না পারে অ্যাম্বুলেন্স, তাহলে কী ব্যবস্থা রাখছে পুলিশ?
কোন কোন রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ?
আমহার্স্ট্র স্ট্রিট থেকে শুরু করে বিধান সরণি, কলেজ স্ট্রিট, ব্রেবোর্ন রোড, স্ট্র্যান্ড রোড, বিবি গাঙ্গুলী স্ট্রিট, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, রবীন্দ্র সরণি (বি কে পাল অ্যাভিনিউ থেকে লালবাজার স্ট্রিট) পর্যন্ত যান নিয়ন্ত্রণের কথা বলছে কলকাতা পুলিশ। এদিকে এসএসকেএম এর পাশ দিয়েই চলে গিয়েছে এজিসি বোস রোড। পাশেই রবীন্দ্র সদন, এক্সাইডের মতো জমজমাট এলাকা। অন্যদিকে কলকাতা মেডিকেল কলেজ আবার দাঁড়িয়ে কলেজ স্ট্রিটের উপর। পাশাপাশি বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট থেকে সিআর অ্যাভিনউ আবার চলে যাচ্ছে এনআরএস-র দিকে। সে ক্ষেত্রে এই রাস্তাগুলির একুশে জুলাইয়ের ভিড় সামলে কীভাবে আপতকালীন পরিষেবাকে স্বাভাবিক রাখে পুলিশ তা নিয়ে চিন্তা থেকেই যাচ্ছে।
কী বলছে লালবাজার?
লালবাজার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল বিভাগের ডিউটি অফিসার সার্জেন্ট উৎপল দেবনাথ যদিও বলছেন এত চিন্তার কোনও দরকার নেই। সদা তৎপর রয়েছে কলকাতা পুলিশ। তাঁর সাফ কথা, “যদিও কোনও জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয় তা মোকাবিলা করার জন্য অতিরিক্ত ফোর্স থাকছে রাস্তায়। কোনও অ্যাম্বুলেন্স বা দমকলের গাড়ি আটকে পড়লেই আমরা দ্রুত রাস্তা পরিষ্কার করে এগিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করব। প্রয়োজনে গ্রিন করিডোর করে দেওয়া হবে।”
একুশে জুলাইয়ের দিন ২৬ জন ডিসি থাকছে শহরে। থাকছেন ৮০ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট পদ মর্যাদার পুলিশ কর্তা। শুধুমাত্র একুশে জুলাইয়ের মঞ্চের কাছেই থাকছে ৩৫০০ পুলিশ কর্মী। থাকছেন ৪ জন ডিসি পদ মর্যাদার পুলিশ কর্তা। রবিবার সকালে মূলত শহরের চার জায়গা থেকে চারটি বড় মিছিল আসবে ধর্মতলার শহিদ দিবসের মঞ্চের কাছে। শ্যামবাজার, হাওড়া স্টেশন, শিয়ালদহ স্টেশন এবং হাজরা মোড় থেকে চারটি বড় মিছিলের জমায়েত রওনা দেবে ধর্মতলার উদ্দেশ্যে।