করোনাকালে গুরুত্ব দিচ্ছেন না অনেকেই, শহর জুড়ে কয়েক’শ মানুষ আক্রান্ত ম্যালেরিয়ায়

গত জানুয়ারি থেকে অগস্ট পর্যন্ত মোট ২৬০০ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

করোনাকালে গুরুত্ব দিচ্ছেন না অনেকেই, শহর জুড়ে কয়েক'শ মানুষ আক্রান্ত ম্যালেরিয়ায়
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 21, 2021 | 6:43 AM

কলকাতা: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের (Second Wave of Covid 19) এখনও রেশ কাটেনি। তৃতীয় ঢেউ আসন্ন। তার মধ্যেই ম্যালেরিয়ার (Malaria) প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে শহরে। গত জানুয়ারি মাস থেকে চলতি অগস্ট মাসের মধ্যে শহরে (Kolkata) মোট ২৬০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন ম্যালেরিয়ায়। পুরসভা (KMC) সূত্রে খবর, বিগত তিন মাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৬০ শতাংশই ফ্যালসিফেরাম ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বা হয়েছেন।

এই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই ফলে দুশ্চিন্তার মেঘ জমেছে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকদের মাথায়। বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুর প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ বৈঠক করেন বৃহস্পতিবার। সেখানে একটি রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। যে রিপোর্ট স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানো হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার ২৫, ৩৯, ৪৭, ৪৮, ৪৯, ৫০, ৬১, ৬২, — এই আটটি ওয়ার্ডে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা সবথেকে বেশি বলেই পুরসভা সূত্রে উল্লেখ করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট রিপোর্টে।

পুরসভায় যাঁরা মশা বিশেষজ্ঞ রয়েছেন তাঁদের কথায়, ম্যালেরিয়া জীবাণু বহনকারী মশা সবথেকে বেশি ছাদের জমা জলকেই পছন্দ করে। তাই সংশ্লিষ্ট বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ছাদের ওপর পুরসভার কর্মীরা গিয়ে জল জমছে কি না তা দেখবেন। করোনা প্রকোপের সময় অনেকেই নিজের বাড়ির ছাদে উঠতে দিতেন না। তাতে আরও বিপত্তি বেড়েছে। কিন্তু এবার আর কোনও বাধা মানা হবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন পুর প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ। ম্যালেরিয়ায় প্রকোপ থাকা এলাকাগুলি ছাড়াও সম্ভাব্য আক্রান্ত হতে পারে এমন এলাকাগুলির বাড়ির ছাদ গুলিতে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট বৈঠকে।

পাশাপাশি শহরের মধ্যে যে বাজারগুলো অত্যাধিক ভিড় হয়, সেখানেও ওষুধ স্প্রে করতে হবে এবং জল যাতে জমতে না পারে তাই এলাকা ঠিক সময়ে পরিষ্কার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাজার গুলির ওপর বিশেষ নজর দিতে পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন অতীন ঘোষ।

কী ভাবে বুঝবেন ম্যালেরিয়া?

করোনা কালে জ্বর হলেই আরটি পিসিআর পরীক্ষা করার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। তাই ম্যালেরিয়ার লক্ষণগুলি আলাদাভাবে চিনে নেওয়া জরুরি। সাধারণর নির্দিষ্ট সময় পরপর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা এই রোগের লক্ষণ। জ্বর ছেড়ে গেলে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়েও কমে যেতে পারে। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসার পাশাপাশি গায়ে প্রচণ্ড ব্যথা, মাথাব্যথা, অনিদ্রা, খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, বমি, হজমে সমস্যা, অত্যধিক ঘাম হওয়ার মতো উপর্গও দেখা যায়। অনেকেই মাংসপেশি, তলপেটে ব্যথা অনুভব করেন।,

তবে এই রোগের সবথেকে কঠিন ধরন হল ‘ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়া’। সাধারণ ম্যালেরিয়ার মতো উপসর্গের পাশাপাশি রক্তশূন্যতা, শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গও দেখা যায় এই ম্যালেরিয়ায়। আরও পড়ুন: বিশ্বের প্রথম ডিএনএ ভ্যাকসিন তৈরি করল ভারত, ১২ উর্ধ্বদের টিকাকরণ শুরু শীঘ্রই