কলকাতা : TV9 বাংলার লাগাতার খবরের জের! এবার নড়েচড়ে বসল আইজার কলকাতা কর্তৃপক্ষ। গবেষক পড়ুয়াদের জন্য জারি করা হয়েছে নতুন নিয়ম বিধি। নতুন গাইডলাইনে বলা হয়েছে, সকাল ৬ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে ল্যাবরেটরি। তারপর আর ল্যাবরেটরিতে থাকা যাবে না। রাত ১২ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত ল্যাবরেটরিগুলিতে চলবে নজরদারি। গবেষণাগারের অতিরিক্ত চাবি থাকবে আইজার কর্তৃপক্ষের হাতে। বাড়তি দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে গাইউদের উপর। আইজার কলকাতায় পিএইচডি-র শেষ বছরের ছাত্র ছিলেন শুভদীপ রায়। ২০১৪ সালে কলকাতা আইজারে ইন্টিগ্রেটেড ফিজিক্স পড়তে ভর্তি হয়েছিলেন শুভদীপ। গত ৪ এপ্রিল সাড়ে ১২টা নাগাদ ফিজিক্স ল্যাবরেটরির দরজা ভেঙে উদ্ধার হয় তাঁর নিথর দেহ। শুভদীপ ঘনিষ্ঠদের দাবি, হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস ইনহেল করে আত্মঘাতী হয়েছেন শুভদীপ।
কিন্তু কেন এই আত্মহত্যা? কোথায় হতাশা? পড়ুয়াদের অভিযোগ, ২০১৬ সালের পর থেকে শুভদীপের গাইড নাকি তাঁকে কোনও সাহায্যই করেননি। নিজের চেষ্টায় তিনটি পেপার রিলিজ করেছিলেন শুভদীপ। কিন্তু ঠিকমতো গাইড না থাকায় গবেষণা শেষ করা অসম্ভব হয়ে পড়ছিল। পিএইচডি গবেষণা অনেকটাই গাইড নির্ভর। গবেষণা শেখার প্রথম ধাপ এই পিএইচডি। গাইডের সাহায্য না পাওয়ায় কি লাগাতার মানসিক চাপে ছিলেন শুভদীপ? সেই চাপই কি দুঃসহ হয়ে পড়েছিল শুভদীপের কাছে? শুধু তাই নয়, ওই পড়ুয়ার মায়ের অভিযোগ, শুভদীপের গাইড ল্যাবরেটরির সব দায়িত্ব শুভদীপের উপর চাপিয়ে দিতেন। তার উপর জুনিয়রদের কাজের দেখাশোনাও করতে হত শুভদীপকেই।
এই পরিস্থিতিতে আইজার কর্তৃপক্ষের তরফে জারি করা এই বিজ্ঞপ্তি যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। নয়া বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সকাল ৬ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে ল্যাবরেটরি। ওই সময়ের মধ্যেই গবেষক পড়ুয়ারা ল্যাবরেটরিতে নিজেদের কাজ করতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে। তবে একান্ত জরুরি পরিস্থিতিতে যদি কোনও গবেষক পড়ুয়াকে ল্য়াবরেটরিতে কাজ করতে হয় রাত ১২ টার পর, সেক্ষেত্রে তাঁর সঙ্গে আরও অন্তত একজন পড়ুয়া থাকতে হবে। এর পাশাপাশি আরও বলা হয়েছে, ল্যাবরেটরি ভিতর থেকে বন্ধ রাখা যাবে না এবং অন্তত একটি দরজা যাতে বাইরে থেকে খোলা যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। ল্যাবরেটরিতে যে সময় কাজ হবে না, ওই সময় ল্যাবরেটরির দরজা বাইরে থেকে বন্ধ রাখতে হবে।