কলকাতা: পটনা, বেঙ্গালুরুর পর এবার মুম্বই। পটনায় ছিল একজোট হওয়ার প্রথম উদ্যোগ। বেঙ্গালুরুতে নাম পেল বিরোধী জোট – ‘ইন্ডিয়া’। আর এবার মহারাষ্ট্রে বৈঠকে বসতে চলেছে ‘ইন্ডিয়া’। ৩১ অগস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর, দুই দিন ধরে চলবে এই বৈঠক। এবার মহারাষ্ট্রে কী হতে চলেছে? রাজনৈতিক মহলের দাবি, সারা দেশে আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে এবার গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে জোট ‘ইন্ডিয়া’। কী কী সেই নীতিগত সিদ্ধান্ত? রাজনীতির কারবারিদের মতে, এই নীতিগত সিদ্ধান্তর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে, একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী, সংসদের বাইরে যৌথ আন্দোলন এবং জাতীয় স্তরে কোর কমিটি গঠন।
চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে আর খুব বেশি সময় বাকি নেই। সঠিক সময়ে ভোট হলে, হাতে এক বছরেরও কম সময়। ভোটের লক্ষ্যে জোট ‘ইন্ডিয়া’র কর্মসূচি আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে মহারাষ্ট্র বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। ২০২৪ এর নির্বাচনের বেশ কিছুদিন আগেই সফলভাবে পথ চলা শুরু করেছে বিজেপি বিরোধী জোট। ভারতীয় রাজনীতিতে আসন সমঝোতা বা ভোট পরবর্তী জোট গঠনের নজির রয়েছে জাতীয় স্তরে। কিন্তু কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিরোধীদের একজোট হওয়া, অতীত ইতিহাসকেই মনে করায় । ১৯৭৭ সালে ইন্দিরা গান্ধীর বিরুদ্ধে জয় প্রকাশ নারায়ণ-এর নেতৃত্বে আন্দোলন এবং জোটবদ্ধ হওয়া কিংবা ১৯৮৯ সালে রাজীব গান্ধীর বিরুদ্ধে বোফর্স কেলেঙ্কারির অভিযোগে বিরোধীদের একজোট হওয়ার ঘটনার সঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে তুলনা করছেন অনেকেই। তবে এক্ষেত্রেও আর এক কদম এগিয়ে ইন্ডিয়া জোট। বিশেষ করে এই নামকরণের প্রশ্নে। কারণ, ইউপিএ নামকরণও হয়েছিল নির্বাচন পরবর্তী সময়ে।
এখনও পর্যন্ত ছন্দবদ্ধভাবেই সংসদে এবং সংসদের বাইরে কর্মসূচি নিয়েছে জোট ‘ইন্ডিয়া’। মণিপুর সফর তার অন্যতম উদাহরণ। অনাস্থা প্রস্তাব আরও বড় উদাহরণ সংসদের ভেতরে লড়াইয়ের প্রশ্নে। এবার এই পরিসরটাকেই আরও বড় করতে চায় মহারাষ্ট্র বৈঠক। জোটবদ্ধ লড়াইয়ের ক্ষেত্রে আপ এবং কংগ্রেসের সম্পর্কের টানাপোড়েন অস্বস্তি বাড়িয়েছে ইন্ডিয়া শিবিরে। শনিবার তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই দুই দলের সম্পর্ক মসৃণ করতে উদ্যোগী হবেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি বঙ্গ কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের টানাপোড়েনও অব্যাহত। এসব অস্বস্তির মাঝেই আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, কিছুদিন আগেই রাহুল গান্ধী জানিয়েছেন, উত্তর প্রদেশ তাঁরা কম আসনে লড়বেন। অর্থাৎ, অন্যান্য বিজেপি বিরোধী শক্তিগুলিকেও এগিয়ে আসার সুযোগ করে দিতে চাইছেন রাহুল। আর এই পদক্ষেপ অবশ্যই ইতিবাচক বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিশেষ করে একের বিরুদ্ধে এক লড়াইয়ের ক্ষেত্রে। সব মিলিয়ে আপাতত সবার নজর মহারাষ্ট্র বৈঠক এবং তার ফলাফলের দিকে।