কলকাতা: ইন্ডিয়া জোটের চতুর্থ বৈঠক ছিল মঙ্গলবার। আর সেই বৈঠক থেকে জোটনেতৃত্বের মুখ হিসাবে কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গের নাম প্রস্তাব করা হয়। এ নাম প্রস্তাব করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু জোটের মুখের নামই নয়, এদিন আসন সমঝোতা নিয়েও কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিংহভাগ আসন কংগ্রেসকে দিয়ে, বাকিকে বিরোধীদের লড়ার প্রস্তাব তাঁর। আজ বুধবার দিল্লিতে কংগ্রেসের হাইকমান্ড বৈঠকে বসছে। বাংলার কংগ্রেস নেতাদেরও ডাক পড়েছে সেখানে। আসনরফা নিয়ে কথা হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। যদি সবটা ঠিকঠাক এগোয়, তাহলে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের হাত ধরতে খুব একটা হয়ত আপত্তি জানাবে না ঘাসফুল। কিন্তু বামেদের অবস্থান কী হবে? বিশেষ করে বাংলায় কী করবেন মহম্মদ সেলিমরা, সেই প্রশ্ন এখন লাখ টাকার। দিল্লিতে যখন আসন সমঝোতা নিয়ে কথা বলেছেন, ইন্ডিয়া জোটের শরিকরা, ঠিক সেই সময় কলকাতায় বসে ধোঁয়াশার সুর সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের গলায়। তাঁর বক্তব্য, “নির্বাচনী সমঝোতা হবে না।” অর্থাৎ বঙ্গ লাল ব্রিগেড যে তাল ঠুকছে মমতার বিরুদ্ধে, স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন সেলিম।
ঘাসফুলের বিরোধিতায় বাংলায় অনড় মহম্মদ সেলিমরা। মহম্মদ সেলিমকে বলতে শোনা গিয়েছে, “এক একটা রাজ্যের এক একটা পরিস্থিতি। সেখানে রাজ্য ভিত্তিক বাস্তবতার উপর দাঁড়িয়ে আসন সমঝোতা হবে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে তৃণমূল ও বিজেপি উভয়কে হারাতে হবে। বিজেপির রাজনীতি ও তৃণমূলের রাজনীতির মধ্যে কোনও তফাৎ নেই। আজকে ইন্ডিয়া বৈঠক করেছে, কাল মোদীকে গিয়ে অন্য কথা বলবে।”
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে সিপিএম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বলেন, কে বলেছে জোট হবে? যেটা হল না তা নিয়ে কথা হয়। অথচ হাজার দিন ধরে চাকরিপ্রার্থীরা পথে বসে আছে, তা নিয়ে প্রশ্ন নেই। ইন্ডিয়া জোটের মঞ্চে সীতারাম ইয়েচুরি থাকলেও বাংলায় মহম্মদ সেলিমরা কোনওভাবেই তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলাতে নারাজ। এদিকে তাঁরা আবার কংগ্রেসে ভরসা রাখেন। কিন্তু কংগ্রস আর তৃণমূল কংগ্রেস যদি আসন সমঝোতায় হিসাব মিলিয়ে ফেলতে পারে, তাহলে কি আর এ রাজ্যে বামেদের সঙ্গে তারা থাকবে? রাজনৈতিক মহলের মতে, বামেদের একক লড়াই আদৌ বাংলার মাটিতে কোনও দাগ কাটতে পারবে কি না তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়।