কলকাতা: সল্টলেকের পর কালীঘাট। ফের আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল মেট্রো স্টেশন চত্বর। বৃহস্পতিবার চাকরিপ্রার্থীরা প্রথমে আচার্য সদনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। সেখানে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় তাঁদের। তারপরই সেখানে থেকে তাঁরা উঠে যান। পুলিশও প্রথমটাই কিছুটা বিভ্রান্ত হয়। চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ ততক্ষণে প্ল্যাকার্ড হাতে মেট্রো স্টেশনের ভিতরে ঢুকে পড়েন। তাঁরা মূলত চেয়েছিলেন মেট্রো ধরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে পৌঁছতে।
চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিরোধ করতে রীতিমতো লাঠি উঁচিয়ে মেট্রো স্টেশনের ভিতরেই ধাওয়া করে পুলিশ। সেসময়ে পালাতে গিয়ে বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী হুড়মুড়িয়ে পড়ে যান। চাকরিপ্রার্থীদের দেখে স্টেশনের ভিতরে সক্রিয় হয়ে ওঠে আরপিএফও। এক দিকে পুলিশ, অন্যদিকে আরপিএফ… মাঝখানে চাকরিপ্রার্থী। একটা চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। হুড়োহুড়ির মধ্যে পড়ে গিয়ে আঘাত পান বেশ কয়েকজন। একজনের মাথায় আঘাত লাগে। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স। স্ট্রেচারে করে তাঁকে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালের বাইরে মাটিতে শুয়ে পড়েন চাকরিপ্রার্থী। বুকের ওপর তখনও পড়ে একটি থালা। তাতে লেখা চাকরি চাই।
যাঁর কোলে মাথা রেখে তিনি শুয়েছিলেন, তিনিও একজন চাকরিপ্রার্থী। তাঁর বক্তব্য, “২০১৪ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। একটা চাকরি দরকার আমাদের সবার। ৯ বছর হয়ে গিয়েছে, একটা প্যানেল পর্যন্ত রাজ্য সরকার প্রকাশ করতে পারেনি। সরকারকে ধিক্কার।”
গোটা পরিস্থিতি তখন কার্যত দাঁড়িয়ে দেখেছে পুলিশ। বুধবারও চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে এমএলএ হস্টেল চত্বর। গেটের বাইরে বসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পুলিশ গেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশের সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের ধস্তাধস্তি হয়। টেনে হিঁচড়ে তাঁদের গাড়িতে তোলা হয়। সেসময় এক চাকরিপ্রার্থীর গলা টিপে ধরারও অভিযোগ ওঠে এক পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে। আবারও চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ রাজপথ তপ্ত হওয়া রোজনামচা হয়ে দাঁড়িয়েছে।