কলকাতা: ঠিক সাত বছর আগে বাংলার রাজনীতি তোলপাড় করে দিয়েছিলেন সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েল। তাঁর সংস্থা নারদ নিউজ এমন কিছু ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনেছিল, যা সাড়া ফেলে দিয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। তৎকালীন প্রথম সারিতে থাকা রাজনীতিকরা ঘুষ হিসেবে নগদ টাকা নিচ্ছেন, এমন অভিযোগই সামনে এনেছিলেন তিনি। যে দৃশ্য তাঁর সংস্থার স্টিং অপারেশনে ধরা পড়েছিল বলে দাবি করা হয়। সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি TV9 বাংলা। সেই ঘটনার ৭ বছর পর ফের তৎপর সিবিআই। নারদ কর্তাকে তলব করা হল কলকাতায়। আগামী সোমবার নিজাম প্যালেসে তাঁকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এবার বেঁকে বসেছেন ম্যাথু। বিমানযাত্রার খরচ না দিলে আসতে পারবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
আগামী সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টায় হাজির হওয়ার নোটিস দেওয়া হয়েছে ম্যাথুকে। সূত্রের খবর, নারদ মামলায় তিনি আগে যে সব তথ্য দিয়েছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেই তথ্য সঠিক কি না, তা যাচাই করতেই ম্যাথু স্যামুয়েলকে তলব করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
তবে ম্যাথুর দাবি, তাঁকে যাতায়াত ও কলকাতায় থাকার খরচ দিতে হবে সিবিআই-কে। তবেই তিনি হাজিরা দেবেন। নারদ-এর আগে তেহেলকা পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ম্যাথু। সেই পত্রিকাতেও একটি স্টিং অপারেশন নিয়ে মামলা হয়েছিল। সেই সময় ২০০৭ থেকে ২০২২-এর মধ্যে হাজিরা দেওয়ার জন্য সিবিআই তাঁকে ২৩ হাজার টাকা দিয়েছিল বলে জানিয়েছেন ম্যাথু। তবে নারদ মামলায় কলকাতা ও দিল্লি মিলিয়ে সিবিআই দফতরে ১০-১২ বার হাজিরা দিলেও কানাকড়ি পাননি তিনি।
ম্যাথুর দাবি, এই বিষয়ে কলকাতার সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা জানিয়েছেন, ট্রেনের টিকিটের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ট্রেনে কলকাতা আসতে ও ফিরে যেতে তাঁর মোট ৬ দিন সময় লেগে যাবে। একজন সাংবাদিকে হিসেবে ওই সময় দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ম্যাথু। আপাতত জট কাটিয়ে তিনি হাজিরা দেন কি না সেটাই দেখার।
অন্যদিকে, প্রশ্ন উঠেছে, এত বছর পর নারদ মামলায় আবার কেন এমন তৎপরতা? সেই সময় ভিডিয়োতে যাঁদের দেখা গিয়েছিল, তাঁদের মধ্যেই অনেকেই তৃণমূলও ছেড়েছেন ইতিমধ্যে। সেই তালিকায় থাকা শুভেন্দু অধিকারী বর্তমানে বিরোধী দলনেতা, দল ছাড়েন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও মুকুল রায়ও। এতদিন পর আবার কি কোনও নতুন তথ্য বেরিয়ে আসবে? সেই অপেক্ষায় রয়েছে রাজনৈতিক মহল।