কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র মৃত্য়ুর ঘটনার পর থেকেই তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। ঘটনার দিন সিনিয়রদের র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছিলেন পড়ুয়া, উপস্থিত ছিলেন বহিরাগতরা! TV9 বাংলার অন্তর্তদন্তে এই খবর আগেই প্রকাশ করা হয়। এবার র্যাগিংয়ের তত্ত্বকেই কার্যত সিলমোহর দিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি। প্রথম বর্ষের ২৫ জন পড়ুয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত কমিটি জানতে পেরেছে ওই দিন র্যাগিংই করা হয়েছিল ওই পড়ুয়াকে।
র্যাগিংয়ের শিকার প্রথম বর্ষের পড়ুয়া
অভিযোগ, ইন্ট্রো দেওয়ার নামে ঘটনার দিন প্রথমে বিবস্ত্র করা হয় নাবালককে। তারপর ওই অবস্থাতেই তাকে হস্টেলের তিনতলার রেলিংয়ে হাঁটতে বাধ্য করেন সিনিয়ররা। আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি জানতে পেরেছে, হস্টেল থেকে পড়ে যাওয়ার পর রাত্রিবেলা গেট বন্ধ করে চলে জিবি। চারবার জিবি মিটিং হয়। পুলিশ যাতে হস্টেলে প্রবেশ করতে না পারে সেই কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয় গেটও। আর গেট বন্ধ করার নেতৃত্বে ছিল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সিনিয়ররা।
কেন হয়েছিল জিবি মিটিং?
নয় অভিযুক্তকে তদন্ত করে পুলিশ জানতে পেরেছে, মৃত্যু নিয়ে পুলিশ কী কী প্রশ্ন করতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়। প্রত্যেকে যেন এক একই কথা বলে তা নিশ্চিত করতেই এই আলোচনা করা হয়। বয়ানে যেন ফাঁক না থাকে তা ঠিক করতেই এই বৈঠক হয়।
অপরদিকে আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওই দিন রাতের জিবি মিটিংয়ে র্যাগিংয়ের প্রমাণ লোপাটেরও চেষ্টা করেন অভিযুক্তরা। যদিও, অভিযুক্তদের দাবি ছিল পনেরোই অগাস্ট ফুটবল খেলা নিয়ে মিটিং হচ্ছিল ওই জিবিতে। তবে তদন্তকারীদের মনে খটকা লেগেছিল একজন পড়ুয়া তিন তলা থেকে পড়ে যাওয়ার পরেই, জিবি হল, তাও ফুটবল খেলা নিয়ে!
পঁচিশজন প্রথম বর্ষের পড়ুয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর আভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি জানতে পেরেছে, ঘটনার দিন হস্টেলে ঢুকেছিল প্রাক্তনীরা। মৃত্যুর ঘটনার পর ওই দিনই রাত্রিবেলা হস্টেল থেকে পালিয়ে যান তাঁরা। তদন্ত কমিটি মনে করছে ডিনকে ফোন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল পূর্ব পরিকল্পিত ভাবেই।
যদিও, যদিও, ঘটনায় অভিযুক্ত প্রাক্তনী সৈকত শিটের দাবি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আপাতত ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়ররাই আতস কাচের নীচে। আজ ফের জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব চালাচ্ছে তদন্ত কমিটি।