কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার ১১ দিন পর প্রকাশ্যে অরিত্র মজুমদার ওরফে আলু। তাঁর খোঁজে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছিল পোস্টারও। লেখা ছিল ‘আলু কোথায়?’ এবার খোঁজ মিলল আলুর। তিনি কাশ্মীরে ট্রেকিংয়ে গিয়েছিলেন। ফেসবুকে পোস্ট করলেন অরিত্র মজুমদার। তাঁর দাবি, ঘটনার দিন তিনি হস্টেলে যানইনি। যে কোনও তদন্তের মুখোমুখি হতে তিনি প্রস্তুত বলেও ফেসবুকে লিখেছেন।
৯ অগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন তলার বারান্দার নীচ থেকে প্রথম বর্ষের ছাত্রের দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাকে ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই খোঁজ মিলছিল না ‘আলু’র। তাঁর নামও এই ঘটনায় উঠে আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পড়ুয়া অরিত্র মজুমদার ওরফে আলুকে নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে চর্চা।
ঘটনার পর থেকে তিনি কোথায় ‘গায়েব’ হয়ে গিয়েছিলেন। এমনকি এমনও দাবি ওঠে কোনও প্রভাবশালী নেতার মদতে তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। সবটাই নিয়ে মুখ খুলেছেন অরিত্র। নিজের সামাজিক মাধ্যমের দেওয়ালে স্বপক্ষে একাধিক যুক্তি খাঁড়া করেছেন।
অরিত্র বলেছেন, “৯ অগস্ট রাতে আমি যাদবপুরের মেন হোস্টেলে ঢুকিইনি। এমনকি, তার আগের বেশ কিছুকাল আমি হোস্টেলে যাইওনি। আমি সেই রাতে কেপিসি হাসপাতালেও গিয়ে উঠতে পারিনি। ফলে, গোটা অভিযোগটাই অবান্তর।” তিনি ১০ তারিখের রাজধানী এক্সপ্রেস ধরে দিল্লি পৌঁছে, সেখান থেকে বিমানে কাশ্মীরে ট্রেকিং করতে গিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন।
তিনি কোনও প্রভাবশালী নেতার ছেলের ছত্রছায়ায় লুকিয়ে রয়েছেন বলে যে দাবি উঠেছিল, তা নস্যাৎ করে বলেন, “… কেউ কেউ লিখেছেন, লিখে চলেছেন, রাজ্যের শাসকদলের কোনও এক প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় আমি লুকিয়ে আছি। এই অভিযোগ অভাবনীয়। আমার ও আমার পরিবারের দিক থেকে দেখলে বীভৎসও বটে।”
তবে তিনিও এই ঘটনার সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। আর প্রয়োজনে সমস্ত রকমের তদন্তের মুখোমুখি হতে তিনি প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন। কলকাতায় ফিরছেন আলু।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও এক মেধাবী ছাত্র সৌরভ চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি গণিতের ছাত্র। তাঁর WBCS অফিসার হওয়ার ইচ্ছা ছিল। আপাতত শ্রীঘরে। সূত্রের খবর, আলুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি নাকি মৃত্যুর পর তথ্য প্রমাণ লোপাট করেছেন। আর সৌরভের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঘটনার রাতে মৃত ছাত্র তার মাকে ফোন করেছিল। অভিযোগ, সে সময়ে সৌরভ ফোন কেড়ে নিয়ে তাঁর মাকে জানিয়েছিলেন, ‘ছেলে ভাল রয়েছে।’ সৌরভের নাম নিয়েছিলেন মৃত ছাত্রের মা। আসলে মৃত ছাত্রের বাবার সঙ্গে চায়ের দোকানে আলাপ হয়েছিল সৌরভের। তাঁর ওপর ভরসা করেই ছেলেকে যাদবপুরের হোস্টেলে ছেড়েছিল মৃত ছাত্রের পরিবার। যদিও একটা বিষয় উল্লেখ্য, পুলিশের কাছে এখনও পর্যন্ত অরিত্রর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই।