RG Kar: আন্দোলনকারীরা বুঝিয়ে দিলেন, চাপের মুখে প্রশাসন বাধ্য হয়েছে অবস্থান বদলাতে
RG Kar Protest: ৩৮ দিনের মাথায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক হল সোমবার। ২ ঘণ্টার বৈঠক, তারপর আরও ৫ ঘণ্টা গেল বৈঠকের কার্যবিবরণী বা মিনিটস লিখতে। তাতে দু'পক্ষের সইসাবুত। এরপর কালীঘাট থেকে স্বাস্থ্যভবনের পথে রওনা দিল জুনিয়র ডাক্তারদের বাস। বাস যখন সেক্টর ফাইভে ঢুকল, তখন সাড়ে ১২টা প্রায়।
কলকাতা: লাইভ স্ট্রিমিং, ভিডিয়ো রেকর্ডিং নিয়ে প্রথম থেকেই অনড় থেকেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। ওদিকে রাজ্য বারবার বলেছে, এতে অনুমতি দেওয়া যাবে না। দু’বার এই দর কষাকষিতেই ভেস্তে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী-আন্দোলনকারীদের মিটিং। অবশেষে সোমবার যখন, লাইভ স্ট্রিমিং, ভিডিয়ো রেকর্ডিংয়ের দাবি থেকে সরেই বৈঠকে বসতে হল, ফেসবুক কেউ কেউ লেখেন, তবে কি রাষ্ট্রযন্ত্রের কাছে নতি স্বীকার করলেন ডাক্তাররা? সোমবার রাতে স্বাস্থ্যভবনের সামনে যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন, জুনিয়র ডাক্তাররা। বারবার তাঁদের বক্তব্যে উঠে এল, ‘আমরা নতি স্বীকার করিনি’। বরং তাঁদের একাধিকবার বলতে শোনা গেল, ‘বাধ্য হয়েছে সরকার’।
৩৮ দিনের মাথায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক হল সোমবার। ২ ঘণ্টার বৈঠক, তারপর আরও ৫ ঘণ্টা গেল বৈঠকের কার্যবিবরণী বা মিনিটস লিখতে। তাতে দু’পক্ষের সইসাবুত। এরপর কালীঘাট থেকে স্বাস্থ্যভবনের পথে রওনা দিল জুনিয়র ডাক্তারদের বাস। বাস যখন সেক্টর ফাইভে ঢুকল, তখন সাড়ে ১২টা প্রায়। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি ডাক্তাররা। জানিয়ে দিলেন, অন্তত মঙ্গলবার বিকালের আগে কর্মবিরতি, আন্দোলন নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তই তাঁরা নিচ্ছেন না।
গত কয়েকদিন ধরে টানা স্বাস্থ্যভবনের সামনে আন্দোলন জুনিয়র ডাক্তারদের। আরজি করে মিশেছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল, বর্ধমান মেডিক্যাল, মেদিনীপুর মেডিক্যাল-সহ বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। তাতেই বেড়েছে আন্দোলনের ঝাঁঝ। সাধারণ মানুষ ছুটে গিয়েছেন, গিয়েছেন সেলেব্রিটিরাও। সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন যে যেখান থেকে পেরেছেন।
গত ১২ সেপ্টেম্বর নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক নিষ্ফলা হয়। এরপর ১৪ সেপ্টেম্বর কালীঘাটের বৈঠকও ফলপ্রসূ হয়নি। এরপর সোমবারের বৈঠক নিয়ে নানা মহলে নানা কথা শোনা যায়। বিশেষ করে এদিন সন্ধ্যা থেকে দীর্ঘ সময় কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যখন ডাক্তাররা বসে, সোশ্যাল মিডিয়ায় যে যার মতো করে আষাঢ়ে গপ্প ফেঁদেছেন।
কেউ কেউ তো গেল গেল রব তুলে দিয়েছেন। কেউ আবার বলেছেন, সব বিক্রি হয়ে গেল! আসলে সোশ্য়াল মিডিয়ার দৌলতে মসিহাকে পলকে ভিলেন বানিয়ে দেওয়া যায়। খুব সহজে মিলিয়ে দেওয়া যায় সে অঙ্ক। যদিও এদিন রাতে সাংবাদিক সম্মেলনে দেবাশিস হালদার, অনিকেত মাহাতো, কিঞ্জল নন্দরা বারবার বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, যা রটে, সবসময় যে তা সত্যিই হবে, এমন সরলীকরণের কোনও অর্থই নেই।
বরং এদিনের বৈঠকের যেটুকু সাফল্য, একটা বড় অংশের ক্রেডিটই আন্দোলেনের সঙ্গে থাকা সাধারণ মানুষকে দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। যদি কারও মনে কোনও দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থেকেও থাকে, তা ঝাঁঝাল বক্তব্যে মুছে দিতে চেয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। বারবার বলেছেন, “আমাদের আন্দোলনের চাপে নতি শিকার করল রাজ্য প্রশাসন।” বলেছেন, মাথা তাঁরা নোয়াননি, মানুষের সমস্বরের কারণেই প্রশাসন ফেরাতে পারেনি। তাঁরা বলেছেন, তাঁরা স্বচ্ছতাকে শক্তি করে এগিয়েছেন। তাই সন্দীপ ঘোষদের যেমন সরতে হয়েছে, মঙ্গলবার বিকালের মধ্যে সরানো হচ্ছে সিপি, ডিসি নর্থকেও। সরতে হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকেও।