কলকাতা: বাঙালির কাছে বইমেলা (Kolkata Book Fair) নিয়ে আবেগ বরাবরই। কলকাতা শহর ও শহরতলির বইপ্রেমীরাই নন, পার্শ্ববর্তী জেলাগুলি থেকেও বহু মানুষ এখানে ভিড় করেন দেশ-বিদেশের সাহিত্যের সংস্পর্শে আসতে। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় বইমেলায় দেখা মিলল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়েরও (Justice Abhijit Ganguly)। অনেক ছোটবেলা থেকেই বইমেলায় আসেন তিনি। তখন আসতেন বন্ধুদের সঙ্গে। কলকাতা বইমেলা সাধারণত মিস করতে চান না তিনি। বললেন, ‘বইমেলায় না এলেই মনে হয় একটা পার্বন মিস করে গেলাম। ঠিক যেমন দুর্গাপুজোয় কলকাতায় না থাকতে মনে হয়।’ কথায় আছে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে কলকাতা বইমেলা হল বাঙালির কাছে চতুর্দশ পার্বন। বললেন, ‘কলকাতা বইমেলার কোনও তুলনা হয় না।’
বইমেলায় এসে বেশ কিছু প্রকাশনার স্টল ঘুরে দেখেন তিনি। কিছু বইও কিনলেন। মার্কসীয় পুস্তক হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করতেও দেখা যায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে। বললেন, ‘এখানে এত মানুষ আসেন, এত ভাল ভাল বই এখানে পাওয়া যায় বিশেষ করে এত ভাল বাংলা বই লেখা হয় ও প্রকাশিত হয় পায়, তা সত্যিই একটি ভাল দিক।’ পাশাপাশি বর্তমানে যে পড়ুয়ারা বাংলাবিমুখ, তাঁদের বাংলা বইয়ের দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শও দিলেন তিনি। বললেন, ‘আমি মনে করি এখনকার ছাত্রছাত্রীরা যাঁরা বাংলা বিমুখ, তাঁদের একটু বাংলা বইয়ের দিকে নজর দেওয়া দরকার। আমি বাংলা বই সবসময় পড়ি, কিনি ও সংগ্রহ করি। এখনকার অনেক ছাত্রছাত্রী বাংলা বিমুখ, বাংলা পড়েন না। কেন পড়েন না, তা তাঁদের পরিবারের লোকেরা বলতে পারবেন। আমি মনে করি অসম্ভব ভাল ভাল বাংলা বই বহুদিন ধরে লেখা হয়ে আসছে। পড়লে বেশ মজা লাগে, আনন্দ পাই।’
আগে যখন বইমেলায় আসতেন, তখনের সঙ্গে এখনকার বইমেলার বিশেষ ফারাক অবশ্য তিনি খুঁজে পান না। যদিও আগে যখন ভিক্টোরিয়ার পাশে ময়দানে বইমেলা হত, তখন তার একটা আলাদা চার্ম ছিল বলেই মত তাঁর। তাছাড়া বাকি সব আগের মতোই রয়েছে বলে জানালেন তিনি। বললেন, ‘আগেও যুবক-যুবতীরা যেমন আসত, আড্ডা মারত, ঘুরে বেরাত, এখনও তেমনই। তবে আগে বইচুরি হত প্রচুর। এখন জানি না হয় কি না।’ আগামী দিনে বই লেখার ইচ্ছাও রয়েছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের।