কলকাতা: আইসিইউ-তে ভর্তি সন্তান, অথচ ওয়েটিং রুমে দু’দণ্ড বসার উপায় নেই মায়ের। অপারেশন থিয়েটারে শুয়ে আছেন বছর ৮৩-র বৃদ্ধা, চাইলেও হাসপাতালে ঢুকতে পারছেন না ছেলে। ভিতরে মন্ত্রী আছেন যে! শনিবার সকাল থেকে তাই বাইপাসের ‘নামী’ বেসরকারি হাসপাতালে হয়রানির শিকার সাধারণ রোগীদের পরিবার। ভিতরে প্রবেশ করতে গেলেই বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। অনুরোধ-উপরোধের পর কাউকে যদি ঢুকতেও দেওয়াও হয়, অপেক্ষা করতে দেওয়া হচ্ছে না ওয়েটিং রুমে। ‘ওদিকে যান, ওদিকে যান’ বলে ছুটে আসছেন নিরাপত্তারক্ষীরা।
শনিবার সকাল থেকে রীতিমতো বিশৃঙ্খলার ছবি ধরা পড়ল ওই বেসরকারি হাসপাতাল চত্বরে। বেলার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায় নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে রীতিমতো বচসা চলছে রোগীর পরিজনদের। কেউ কেউ কেঁদে ফেলেন। তাতেও কোনও লাভ হয় না। যে মন্ত্রী কোটি কোটি টাকার রেশন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত, তাঁর জন্য কেন এভাবে হয়রান হতে হবে সাধারণ মানুষকে? এমনটাই বলছেন পরিজনেরা।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বাড়ি থেকে বন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করে ইডি। তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ঠিক কী কী অভিযোগ সামনে আসছে, আদালতে তুলে ধরে ইডি। ঠিক যখনই ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হল, তখন এজলাসেই জ্ঞান হারান বালু। বমি করতে থাকেন। তাঁকে সামলাতে ছুটে যান তাঁর মেয়ে। এরপরই আদালতের নির্দেশে বাইপাসের ধারের এই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে। আপাতত সেখানেই আছেন তিনি। আদালতের নির্দেশেই মন্ত্রীকে যথেষ্ট নিরাপত্তাও দেওয়া হয়েছে। তার জেরেই এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয় বলে অভিযোগ।
তবে রাজ্যে এই ছবি নতুন নয়। গত বছর আর তৎকালীন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পরও এমন অভিযোগ সামনে এসেছিল। ইএসআই হাসপাতালে যখন তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছিল, তখনও একই অভিযোগ তুলেছিলেন রোগীদের পরিজনেরা। শনিবার বেসরকারি হাসপাতালে যে ছবি দেখা গিয়েছে, তাতে কর্তৃপক্ষ কার্যত চুপ। এক আধিকারিককে এই পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, কার্যত উত্তর না দিয়েই বেরিয়ে যান তিনি।