কলকাতা : নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। রয়েছেন তৎকালীন উপদেষ্টা কমিটির একাধিক সদস্যও। কাদের সুপারিশে চাকরি দেওয়া হয়েছিল ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই এবার সিবিআই-এর জালে ধরা পড়েছেন প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। নিয়োগে ঠিক কেমন ছিল কল্যাণময়ের ভূমিকা?
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বাগ কমিটির তরফ থেকে কলকাতা হাইকোর্টে যে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছিল, তাতেও নাম ছিল কল্যাণময়ের।
সূত্রের খবর, নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে কফিনে শেষ পেরেক মারার কাজটাই নাকি করতেন কল্যাণময়। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশে যে উপদেষ্টা কমিটি তৈরি হয়েছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন শান্তিপ্রসাদ সিনহা। শান্তিপ্রসাদ গ্রেফতার হয়েছেন আগেই। অভিযোগ, ওই উপদেষ্টা কমিটিই সুপারিশপত্র দিত চাকরি প্রার্থীদের। স্কুল সার্ভিস কমিশনের সেই সুপারিশের ভিত্তিতে চাকরি প্রার্থীদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিতেন পর্ষদ সভাপতি কল্যাণময়। যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও যাঁদের চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ, তাঁদের প্রত্যেকের নিয়োগপত্রেই সই থাকত মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি কল্যাণময়ের।
সিবিআই সূত্রের খবর, কেন তিনি ভুয়ো নিয়োগপত্রে সই করেছেন, এই উত্তর বারবার কল্যাণময়ের কাছে জানতে চেয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা। আর কল্যাণময় নাকি বারবার দায় ঠেলেছেন এসপি সিনহা কমিটির ওপর। সূত্রের খবর, সুপারিশের ভিত্তিতে তিনি নিয়োগ করেছেন বলে জানিয়েছেন সিবিআই-কে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কল্যাণময়ের যুক্তি ধোপে টেকেনি। গ্রেফতার হতে হয়েছে তাঁকে।
যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে চাকরি দেওয়া হয়েছে অযোগ্য প্রার্থীদের। গত কয়েক বছর ধরেই এমন অভিযোগ সামনে এসেছে। শহরের রাস্তায় এই দাবি নিয়ে এখনও চলছে বিক্ষোভ। দীর্ঘ মামলা চলার পর হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত শুরু হয়েছে। এরপরই গ্রেফতার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পরে এই মামলায় একে একে গ্রেফতার হয়েছেন অশোক সাহা, শান্তিপ্রসাদ সিনহা। শুধু উপদেষ্টা কমিটির সদস্যরাই নন, গ্রেফতার হয়েছেন প্রসন্ন রায় ও প্রদীপ সিং নামে আরও দুজন, যাঁরা মিডলম্যানের কাজ করতেন বলে সূত্রের খবর। আর এবার গ্রেফতার করা হল কল্যাণময়কে।