কলকাতা: “ছেলেমেয়েরা যাঁর হাত থেকে জীবনের প্রথম সার্টিফিকেট নিয়েছে, তিনি আজ চুরির দায়ে জেলে।” মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে মন্তব্য করলেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবারও প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন তিনি। কল্য়াণময় গ্রেফতারি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়লে দিলীপ বলেন, “শিক্ষামন্ত্রী জেলে। গোটা শিক্ষা দফতর চোরেদের আড্ডা। বাংলার কপালে এরকম খারাপ সময় আগে আসেনি।”
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ছ’ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর সিবিআইয়ের হাতে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হয়েছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। শুক্রবার সিবিআই বিশেষ আদালতে হাজির করানো হবে কল্যাণময়কে। অভিযোগ, এসএসসি-র নিয়ম না মেনে এসপি সিনহার নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা কমিটি অযোগ্যদের নিয়োগের সুপারিশ করত।
অভিযোগ, নিয়োগপত্রে সই করতেন কল্যাণময়। হাইকোর্ট নিযুক্ত বাগ কমিটির রিপোর্টেও লেখা হয়েছিল, কল্যাণময়ের নির্দেশেই ভুয়ো নিয়োগপত্র তৈরি হয়েছিল।
প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও কটাক্ষ করেন তিনি। তিনি বলেন, ” পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ঐতিহাসিক চুরি। হাজার হাজার মানুষ সুবিধা নিয়েছে। এর জল অনেক দূর গড়াবে। কাউকে ছাড়া হবে না।”
প্রসঙ্গত, পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতারির পর থেকেই এসএসসি দুর্নীতির একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য সামনে এসেছে। এসএসসি দুর্নীতির তদন্তে যে তথ্য সামনে এসেছে, মন্ত্রীর সুপারিশে তৈরি হয়েছিল উপদেষ্টা কমিটি। যার নেতৃত্বে ছিলেন শান্তিপ্রসাদ সিনহা। এই হাইপাওয়ার কমিটি অযোগ্যদের সুপারিশপত্র দিত বলে অভিযোগ। নিয়োগ দুর্নীতি চক্রে কফিনে শেষ পেরেক মারার কাজ করতেন কল্যাণময়।
এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্তে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে নিজেদের হেফাজতে চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই কারণে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আজ আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করানো হবে। দুর্নীতি কাণ্ডের কিনারা করতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর জন্য প্রশ্নমালা সাজিয়ে তৈরি সিবিআই-এর গোয়েন্দারা। পার্থকে নিজেদের হেফাজতে পেতে আলিপুর সিবিআই বিশেষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিল সিবিআই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন বিচারক।