Kamduni Verdict: ফাঁসির সাজা থেকে সোজা বেকসুর খালাস! কামদুনি মামলায় কেন ছাড়া পেল আমিন

Shrabanti Saha | Edited By: Soumya Saha

Oct 07, 2023 | 2:51 PM

Calcutta High Court: অন্যতম অভিযুক্ত আমিন আলিকে নিম্ন আদালত দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিল। হাইকোর্ট তাকে বেকসুর খালাস করে দিয়েছে। কোন কোন যুক্তিতে বেকসুর খালাস পেল নিম্ন আদালতে ফাঁসির সাজা পাওয়া আমিন আলি? কী উঠে এল আদালতের নির্দেশনামায়?

Kamduni Verdict: ফাঁসির সাজা থেকে সোজা বেকসুর খালাস! কামদুনি মামলায় কেন ছাড়া পেল আমিন
কলকাতা হাইকোর্ট
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

কলকাতা: কামদুনি মামলায় রায় ঘোষণা করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রায়ের পর হতাশ কামদুনির প্রতিবাদীরা। অন্যতম অভিযুক্ত আমিন আলিকে নিম্ন আদালত দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিল। হাইকোর্ট তাকে বেকসুর খালাস করে দিয়েছে। কোন কোন যুক্তিতে বেকসুর খালাস পেল নিম্ন আদালতে ফাঁসির সাজা পাওয়া আমিন আলি? কী উঠে এল আদালতের নির্দেশনামায়?

কামদুনি মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত আনসার আলি ও আমিন আলির শরীরে আঁচড়ের দাগ পাওয়া গিয়েছিল। মেডিকেল পরীক্ষায় আনসারের শরীরে আঁচড়ের দাগগুলিকে নখের আঁচড় বলা হলেও, আমিনের ক্ষেত্রে স্পষ্টভাবে নখের আঁচড় উল্লেখ করা হয়নি। আমিনের শরীরের আঁচড়গুলিকে ‘স্ক্র্যাচ অ্যাবরাসন’ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল মেডিকেল পরীক্ষায়। অর্থাৎ, কোনও ঘর্ষণের কারণে লাগা আঁচড়।

এদিকে আমিনের দাবি, ঘটনার সময়ে সে ওই ঘটনাস্থলেই ছিল না। আমিনের যুক্তি ছিল, সে মার্বেলের দোকানে কাজ করত। সেখানেই কাজের সময়েই ছড়ে গিয়েছিল। আমিনের পক্ষে সাক্ষ্য দেন তাঁর বাবা এবং মার্বেলের দোকানের অন্য এক কর্মী। আমিনের বাবা জানান, তাঁর ছেলে মার্বেলের দোকানে কাজ করত এবং বাড়িতে সেই কাজের নমুনাও দেখান আমিনের বাবা। মার্বেল দোকানের অন্য এক কর্মীও আমিনের সেখানে কাজ করার বিষয়টি জানান। এদিকে আমিনের শরীরে ওই আঁচড়ের ক্ষত যে মার্বেলের দোকানে কাজ করার সময় হয়নি, সেটি নিয়ে কোনও প্রমাণ্য তথ্য রাজ্যের তরফে পেশ করতে পারেনি আদালতে।

এর পাশাপাশি অভিযুক্তদের শনাক্তকরণের বিষয়টিও যেভাবে আদালতের নির্দেশনামায় উঠে এসেছে, সেটিও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। আনসার ও সইফুল ছাড়া বাকি অভিযুক্তদের শনাক্তকরণ যে সময়ে হয়েছে তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছে আদালত। ২০২৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর গোপাল ও ভোলার নাম করেন সাক্ষীরা। তারও চার মাস পরে ২০১৪ সালের ২৮ জানুয়ারিতে এমানুল, নুর, আমিন ও রফিকুলকে শনাক্ত করা হয়। এক্ষেত্রে আদালত মনে করছে, অভিযুক্তরা ও সাক্ষীরা একই জায়গা থাকেন সেক্ষেত্রে অন্তত নাম-পরিচয় জানার কথা। সেক্ষেত্রে ২৭ সেপ্টেম্বর এমানুল ও আমিনকে চিহ্নিত করতে না পারলেও, চার মাস পর শনাক্ত করা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে আদালত।

আদালত আরও জানাচ্ছে, আমিন আলির হাতে ও কাঁধে যে আঁচড়ের দাগ রয়েছে, সেটি অপরাধের সময়ে হয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। কিন্তু এর স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি রাজ্য। ফলে সেই যুক্তি মেনে নেওয়া যাচ্ছে না বলেই মনে করছে আদালত। চিকিৎসক বলেছেন, যে আমিন আলির হাতে ও কাঁধে আঁচড়ের ক্ষত রয়েছে। কিন্তু আমিন আলির বক্তব্য, তিনি মার্বেলের দোকানে কাজের সময়ে এই চোট লেগেছে। তার হয়ে সাক্ষীও দিয়েছে দোকানের অপর এক কর্মী। কিন্তু সেই যুক্তিতে নিম্ন আদালত বিশ্বাস করেনি।

আদালত মনে করছে, শুধুমাত্র পারিপার্শ্বিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে তখনই এমন কোনও সিদ্ধান্তে আসা যায় যখন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আরও অন্যান্য এমন তথ্য পাওয়া যাবে। কিন্তু, আমিন আলি যে অপরাধে যুক্ত ছিল, তারও যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। নির্যাতিতার ভাই প্রথমে আমিনের নাম উল্লেখ করেননি। ৮ বিঘা জমির ওখানে আমিনকে সেদিন দেখতে পাননি নির্যাতিতার ভাই। সেদিন কেবল আনসার ও সইফুলকেও দেখেছিলেন নির্যাতিতার ভাই। চার মাস পরে আমিনের নাম বলে। এছাড়া নির্যাতিতার মা-বাবাও নিশ্চিত করে বলতে পারেননি আমিন সেখানে ছিল। আদালতে যে তথ্য প্রমাণ জমা পড়েছে, তার ভিত্তিতে সইফুল ও আনসারের সঙ্গে ঘটনায় এমানুল, ভুট্টো, ভোলা ও আমিনও যুক্ত ছিল, তা প্রমাণ করতে পারেনি পুলিশ। যদিও সইফুলের বয়ানে উঠে এসেছে যে তথ্য প্রমাণ লোপাটের জন্য তার সইফুল, আনসার, ভুট্টো, এমানুল, ভোলানাথও ঢুকেছিল সেখানে। কিন্তু আমিন, নুর ও রফিকুল যে সেখানে ছিল, তা সইফুলের বয়ানে পাওয়া যায়নি।

Next Article