কলকাতা : কেন্দ্রীয় সরকারের (Central Government) সঙ্গে আলোচনায় বসতে চলেছেন কেএলও প্রধান জীবন সিং (KLO Jiban Singha)। বিগত কয়েকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল এই জল্পনা। সম্প্রতি কেএলও-র (KLO) তরফে সামনে আনা একটি ভিডিয়ো সামনে আসতেই সেই সম্ভাবনা আরও জোরালো হয়েছে। সূত্রের খবর, প্রায় দু’দশকের বেশি সময় ধরে কেএলও প্রধান জীবন সিংহ রয়েছেন মায়ানমারে। এরইমধ্যে গত বৃহস্পতিবার কেএলও প্রধান একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি সামনে আনেন। যেখানে তিনি স্পষ্ট লেখেন, ‘আমাদের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের আলোচনা যথেষ্ট ফলপ্রসূ হয়েছে। আমরা অর্থাৎ কেএলও-র শীর্ষ নেতৃত্ব আলোচনায় বসতে যাচ্ছি।’ তাঁর এই ঘোষণার পরদিনই ছড়াতে থাকে একটা জল্পনা। শোনা যায় মায়ানমারের মূল ক্যাম্প ছেড়ে সীমান্ত পার করে অসম রাইফেলসের সেফ হাউসে এসেছেন জীবন। যদিও অসম সরকার ও কেএলও শীর্ষ নেতৃত্ব কারও তরফেই এ কথার সত্যতা স্বীকার করা হয়নি। এরইমধ্যে মঙ্গলবার কেএলও-র পক্ষ থেকে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়। সেই ভিডিয়োতে দেখা যায় কেএলও নেতা দেবরাজ সিংয়ের সঙ্গে জীবন সিং একটি পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। ওই ভিডিয়োতে দাবি করা হয়েছে, তাঁরা শান্তি আলোচনায় যোগ দিতে যাচ্ছেন।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, মায়নামারের সীমান্ত লাগোয়া রাস্তা ধরেই মায়ানমার-নাগাল্যান্ডের বর্ডারের কাছে ওই জায়গায় এসেছেন জীবন। জায়গাটি আদপে নাগাল্যান্ডের মন জেলার অধীনে। সূত্রের খবর, তাঁরা হয়তো খুব শীঘ্রই দিল্লি যাবেন শান্তি আলোচনায় বসার জন্য। দিল্লি যাওয়ার আগে তাঁদের গুয়াহাটিতে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই কেএলও প্রধান তাঁর মেয়ে ও বাকি পরিবারের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। দিল্লি যাওয়ার আগে সে কারণেই গুয়াহাটিতে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। এদিকে বিগত বছর দেড়েক ধরে অসম সরকারের সঙ্গে কেএলও-র একটি শান্তি আলোচনা শুরু হয় বলে শোনা যায়। হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সরকারের দাবি,জীবন সিংই তাঁদের প্রথম একটি চিঠি দিয়েছিলেন। সেই চিঠিতেই সরকারের সঙ্গে আলোচনার কথা বলা হয় কেএলও-র তরফে।
অসমে হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সরকার ক্ষমতায় আসার পর উত্তর পূর্ব ভারতের একাধিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তাঁরা আলোচনায় বসে। এই সমস্ত সংগঠনের সদস্যদের মূল স্রোতে ফেরানোর চেষ্টাও শুরু হয়। সেই সূত্র ধরে জীবন সিংহের সঙ্গে আলোচনা চালানো বা সহজভাবে বললে কেএলও-কে শান্তি আলোচনায় বসানোর জন্য একটা উদ্যোগ আগেই শুরু হয়ে যায়। এই আলোচনায় মূলত কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা থাকেন। কিন্তু, যেহেতু কেএলও বাংলা ও অসম দুই জায়গাতেই সক্রিয় সে কারণে দুই রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদেরই এই বৈঠকে থাকার কথা। এখন দেখার বৈঠক হলে সে পর্যন্ত জল কোনদিকে গড়ায়। অস্ত্র ফেলে কি জীবনের মূল স্রোতে ফিরবে জীবনের দল? নজর বৈঠকের দিকেই।