কলকাতা: যাদবপুরের ছাত্র মৃত্যু কাণ্ডে তদন্ত এগচ্ছে, পিঁয়াজের খোসার মতো ততই যেন তথ্য উঠে আসছে। এবার ফাঁস হল বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের কিছু অলিখিত তথ্য। মৃত পড়ুয়ার ‘হস্টেল বাপ’ ছিল ধৃত মনোতোষ ঘোষ। হস্টেলে নতুন কেউ আসলে তাঁকে একটা ‘হস্টেল বাপ’ বনাতে হয়। সূত্রের খবর, সিনিয়রাই মনোতোষকে ‘হস্টেল বাপ’ বানিয়েছিল। আর ‘হস্টেল বাপের’ রাজনৈতিক পরিচয়ই ওই পড়ুয়ার রাজনৈতিক পরিচয় হয় ভবিষ্যতে। সূত্রের খবর, মনোতোষ ঘোষ ফোরাম ফর আর্টস ( FAS)-এর সক্রিয় কর্মী বলে জানা যাচ্ছে।
‘হস্টেল বাপ’ কী?
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেল সহ অন্যান্য হস্টেলের অলিখিত নিয়ম বা আইন। যখন কোনও পড়ুয়া হস্টেলের আবাসিক হতে চাইবে তখন তাঁকে তাঁর ‘বাপ’ খুঁজে নিতে হবে। আর এই বিষয়টাকেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলের ভাষায় বলা হয় ‘হস্টেল বাপ’। আর এই ‘হস্টেল বাপ’-এর রাজনৈতিক পরিচয়েই আগামিদিনে ওই পড়ুয়ার রাজনৈতিক পরিচয় হয়ে থাকে সাধারণত। এই হস্টেল বাপ ঠিক করার ক্ষেত্রে দায়িত্ব নেন সিনিয়ররা। এইভাবেই চলে হস্টেল।
আর মৃত পড়ুয়ার ক্ষেত্রে ‘হস্টেল বাপ’ ঠিক হয়েছিল মনোতোষকে। জানা যাচ্ছে, তাঁরই তত্ত্বাবধানে থাকতে হত মৃত পড়ুয়াকে। ২৪ ঘণ্টা কার্যত মনোতোষের নজরদারি ও তাঁর সমস্ত দাবি-দাওয়া মেনে নিতে হবে মৃত পড়ুয়াকে।
জুটা (JUTA) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই দাবি করেছি প্রথম বর্ষের ছাত্রদের জন্য হস্টেল আর দ্বিতীয় দাবি ছিল যাঁরা প্রাক্তন ছাত্র তাঁদেরকে বের করার। আমাদের কাছে খবর আছে গতকাল ওই হস্টেলে ফের সিনিয়ররা মিটিং করেছে। আর এই একই জিনিস চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ সব জানে। সেদিন রাত্রে কারা উপস্থিত ছিল। তবুও কেন তাঁদের ধরছে না?”
এ দিকে, ওই পড়ুয়ার মৃত্যুতে রবিবার ভোর রাতে গ্রেফতার হন দীপশেখর দত্ত (১৯) ও মনোতোষ ঘোষ (২০)। এর আগে গ্রেফতার হন সৌরভ চৌধুরী নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (৯ অগস্ট) যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল থেকে পড়ে মৃত্যু হয় প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার। ‘সিনিয়র দাদাদের’ র্যাগিংয়ের বলি হতে হয়েছে তাঁকে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের। এই ঘটনার পর ইতিমধ্যেই তোলপাড় হয়েছে রাজ্য-রাজনীতি।