কলকাতা: দিল্লিতে তলব। তলব কলকাতায়। দিল্লিতে কয়লা কেলেঙ্কারির তদন্তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করা হয়েছে। কয়লা কেলেঙ্কারির তদন্তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে পাঠিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। রবিবারই দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তিনি। এদিকে, সোমবারই আবার প্রাক্তন দেহরক্ষীর রহস্যমৃত্যুর তদন্তে ভবানীভবনে তলব করা হয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
১ সেপ্টেম্বর অভিষেক-পত্নী রুজিরা নারুলাকেও ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণ দেখিয়ে হাজিরা দেননি রুজিরা। কলকাতায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আর্জি জানিয়েছিলেন রুজিরা। কিন্তু অভিষেক সে পথে হাঁটবেন না। তিনি সোমবার ইডি দফতরে যাবেন। সে কারণেই রবিবার তাঁর দিল্লি যাত্রা।
উল্লেখ্য, কয়লা-কাণ্ডে ফের সক্রিয় হয়েছে ইডি। সস্ত্রীক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করেছে ইডি। আগামী ১ সেপ্টেম্বর অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা এবং ৬ সেপ্টেম্বর অভিষেককে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সরব হন তৃণমূল নেতারা। আর তার প্রেক্ষিতে আগে অভিষেকের মুখে শোনা যায় আক্রমণের সুরও।
হিন্দিতে তিনি প্রকাশ্যেই অমিত শাহকে নিশানা করে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, “আপ লোগোকো লালত হ্যায় থোড়া বহুত ধমকানে সে চমকানে সে এ বইঠ জায়েগা।”
ইডি-র এই তলব প্রসঙ্গে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তাঁর অভিযোগ রাজনৈতিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পেরে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে বিজেপি। এবার একই প্রসঙ্গে সিবিআই, ইডি-র বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করে এবং কেন্দ্রের সমালোচনায় মুখর হয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির এহেন মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এর আগে আক্রমণ করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। অভিযোগ, অভিষেক ও তাঁর স্ত্রীকে তো বটেই, তৃণমূলের সর্বসাধারণ সম্পাদকের কলেজের বন্ধুদের কাছেও পৌঁছে যাচ্ছে সিবিআই এবং ইডি। এবং গোটা ঘটনাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসাবে অবহিত করেছেন সুখেন্দু শেখর। একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, একাধিক ফৌজদারি মামলা থাকা সত্ত্বেও অসমের হেমন্ত বিশ্বশর্মা বা বাংলার শুভেন্দু অধিকারীর মতো বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
এদিকে কালকেই বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ডেকে পাঠিয়েছে সিআইডি। সকাল এগারোটায় তাঁকে ভবানীভবনে পৌঁছতে বলা হয়েছে। মন্ত্রী থাকাকালীন দেহরক্ষী হত্যা মামলায় শুভেন্দুকে ডাকা হয়েছে। তিনি চিঠি পেয়েছেন কি না, বা আদৌ যাবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। তাঁর বিরুদ্ধে অন্যান্য মামলার সঙ্গে এই মামলাটির তদন্তভারও যাতে সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়, সেই আবেদন জানিয়ে সম্প্রতি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু। তাঁর এখনও মীমাংসা হয়নি।
তবে ইতিমধ্যেই তৈরি করা হয়েছে প্রশ্নমালা। সূত্রের খবর, শুভেন্দুর অন্য দেহরক্ষীদের বয়ান হাতে নিয়েই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান তদন্তকারীরা। এক এএসআই শুভেন্দু অধিকারীর প্রাক্তন দেহরক্ষী শুভব্রত চক্রবর্তীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর কাছেই মৃত্যুকালীন জবানবন্দি দিয়েছিলেন ওই দেহরক্ষী। সেই এএসআই-এর বয়ান সিআইডি-র অন্যতম হাতিয়ার। আরও পড়ুন: ‘ওঁরা তো গরু-ছাগল নন, যে বেঁধে রাখব…’, সৌমেনের তৃণমূল যোগে চরম কটাক্ষ দিলীপের