কলকাতা: ৯ ঘণ্টা ইডির জেরার মুখে পড়লে লোকে এমনিই আবোল তাবোল বকে! তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোমবারই দিল্লিতে কয়লা কাণ্ডে ইডি তদন্তকারী আধিকারিকদের মুখোমুখি হয়েছেন অভিষেক। আর সেই প্রসঙ্গে মঙ্গলবার নিউটাউনে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অভিষেককে কটাক্ষ করলেন দিলীপ।
ইডির জেরা প্রসঙ্গে অভিষেক সোমবারই বলেছেন, “জীবন দেবো, কিন্তু মাথা নত করব না।” সে প্রসঙ্গে এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, “জীবন কোথায় দিচ্ছেন! জীবন নিয়ে তো পালিয়ে গেল নেতারা। ৯ঘন্টা যদি ইডি জেরা করে তখন লোকে অনেকেই আবল তাবোল বকে। সবে তো শুরু হয়েছে। যে নেতারা ভুবনেশ্বর গিয়েছিলেন, তাদেঁর চেহারাই পাল্টে গিয়েছিল।”
কয়লা কাণ্ডে ইডির তদন্ত নিয়ে দিলীপ বলেন, “এতদিন ভেবেছিল পুলিশ-সিআইডি দিয়ে চালিয়ে দেবেন। চমকে রেখে দেবেন যা ইচ্ছা করবেন। ওঁদের রাজত্বকালে কয়লা-বালি পাথর লুট হয়েছে, গরু পাচার হয়েছে। একটা পার্টি অফিসিয়ালি এই কারবারগুলো করছে। তাদের সব নেতা জড়িত। না পুলিশ কমপ্লেন নেয়, এখন সিআইএসএফ দেখানো হচ্ছে।”
কয়লা গরু পাচার কাণ্ডে লিঙ্কম্যান তৃণমূল যুব নেতা বিনয় মিশ্র সম্পর্কে দিলীপ বলেন, “তাঁদের নেতারা বাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন। গায়েব হয়ে যাচ্ছেন। অন্য দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে নিচ্ছেন, কতটা সৎ ছিলেন ওঁরা!”
প্রসঙ্গত, সোমবার ৯ ঘণ্টা ইডির জেরার মুখে ছিলেন অভিষেক। তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, “যা করার আছে করে নিন। তৃণমূল কোনও অবস্থাতেই মাধা নোয়াবে না।” সকাল ১১ টায় দিল্লিতে ইডির জামনগরের অফিসে ঢোকার পর চলে ম্যারাথন প্রশ্নোত্তর পর্ব। একগুচ্ছ প্রশ্নের মধ্যে উঠে আসে বিনয় মিশ্র, রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ। ৯ ঘণ্টা পর ইডি দফতর থেকে বেরোন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি। বেরিয়েই পদ্ম শিবিরকে কড়া বার্তা দেন তিনি। দিল্লি থেকে তো বটেই, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে গিয়েও তৃণমূল গেরুয়া শিবিরকে পরাজিত করবে বলে বার্তা দেন তিনি।
৯ ঘণ্টার জিজ্ঞসাবাদে অভিষেককে যে একাধিক অস্ব্স্তিজনক প্রশ্নে তদন্তকারী আধিকারিকেরা চাপের মুখে ফেলতে চেয়েছেন, তেমনটাই সূত্রের খবর। আর সেই জেরা শেষ করে রীতি মতো গলার জোরে অভিষেক বলেন, ‘কোন মায় কা লালের হিম্মত আছে দেখি, যে ধমকে- চমকে তৃণমূলকে চুপ করাবে। যা করার আছে করে নিন। ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্স যা লাগানোর আছে লাগিয়ে দিন। কিন্তু বিজেপিকে আমরা হারাবই।’
ইডির মোট চারজন আধিকারিক এ দিন জেরা করছেন অভিষেককে। আর সেই প্রশ্নে অবশ্যই রয়েছে বিনয় মিশ্রের নাম। রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেকের শ্যালিকা মানেকা গম্ভীরের নামে থাকা অ্যাকাউন্ট নিয়েও প্রশ্ন করা হয়েছে তাঁকে। বেরিয়ে অভিষেক জানিয়েছেন যে তিনি সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। আরও পড়ুন: ‘কোন মায় কা লালের হিম্মত আছে দেখি’, ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর বেরিয়ে বললেন অভিষেক