কলকাতা: ভোট পূর্বে ট্রেন্ডিং ছিল ‘দমবন্ধ পরিবেশ’ অতঃপর ‘বেসুরো’ আর ভোট পরবর্তী বঙ্গে রাজনীতিতে নয়া আবহ ‘ঘর ওয়াপসি’। আর তাতেই ভোট মিটলেও জারি বঙ্গ যুদ্ধ। বঙ্গ রাজনীতি এখন তাকিয়ে রয়েছে রাজীবের তৃণমূল প্রত্যাবর্তনের লগ্নে! এই পরিস্থিতিতে দলবদলুদের নিয়ে এবার প্রকাশ্যেই মুখ খুললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তাঁর কথায় উঠে এলে ‘ভালো ছেলে’ রাজীবের প্রসঙ্গও।
সোমবার সকালে ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণের সময়ে তিনি বললেন, “দলবদল একটা স্বাভাবিক ব্যাপার, অস্বাভাবিকত্ব কিছু নেই। তবে এবার একটু বেশি দলবদল হচ্ছে, যেভাবে ভোটের পর হিংসা বেশি হচ্ছে।”
রাজীব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ” কে কোথায় গেলেন, তার সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। ওঁরা বিজেপির হল কোথায়? বিজেপির না হয়েও দলবদল করছেন! আগে তো বিজেপির হতে হবে। যাঁরা দলবদল করছেন, তাঁদের জন্য বিজেপির কিছু যায় আসে না।”
উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগেও চিত্রটা ছিল এক্কেবারে ভিন্ন। শুভেন্দু-শীলভদ্র-অতীন ঘোষের পর যখন রাজীবের নাম বিজেপির পালে উঠে আসছিল, তখন দিলীপ ঘোষই মন্তব্য করেছিলেন, “রাজীবকে দলে স্বাগত। ভাল ছেলে। ভাল কাজ করেছিল। ও দলে আসতে চাইলে স্বাগত।” জল্পনা সত্যি করে ভোটের কিছুদিন আগেই বিজেপিতে নাম লেখান রাজীব। কিন্তু এখন বিজেপি নেতৃত্বের গলাতেই ভিন্ন সুর! ‘ওঁরা বিজেপির ছিলেনই বা কবে!’ বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে আদতে দিলীপ ঘোষ দলবদলুদের নীতি নিয়েই প্রশ্ন তুলতে চেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, রবিবারই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে যান রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন পার্থবাবু মায়ের মৃত্যুর পর তাঁকে সমবেদনা জানাতে যান তিনি। তবে তা নিয়ে তাঁর দলবদলের জল্পনাটা আরও বেশি করে প্রকট হয়ে ওঠে। তার আগেই অবশ্য কুণাল-রাজীব ‘সৌজন্য’ সাক্ষাৎ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছিল। রবিবারই দলবদলুদের নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কড়া বার্তা দেন দিলীপ ঘোষ।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি লিখেছেন, “দল ছাড়াটা অনেকে অভ্যাসে পরিণত করেছেন। দলে থাকতে গেলে ত্যাগ-তপস্যা দরকার। ক্ষমতালোভীরা বিজেপিতে থাকতে পারবেন না। বিজেপি তাদের রাখবে না।”
আরও পড়ুন: গাড়ুলিয়ায় ‘গদ্দার’ তকমায় পোস্টার! অতঃপর নিজের অবস্থান স্পষ্টই করে ফেললেন মুকুল ঘনিষ্ঠ সুনীল সিং
বেসুরোদের নিয়ে এবার অস্বস্তি দুই শিবিরেই। মুকুল রায় তৃণমূলে ফেরার পর লাইনে রয়েছেন আরও অনেকে। বেসুরো বিজেপিরও বহু নেতা। সব ঠিক থাকলে এই সপ্তাহেই তৃণমূলে ফিরতে পারেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁর প্রত্যাবর্তন নিয়ে আপত্তি রয়েছে দলেরই একাংশের। প্রকাশ্যে রাজীবের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আর রাজীব না ফেরানোর জন্য ‘দিদি’র কাছে দরবার করছেন অপর সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন শুধু বাকি, রাজীবের প্রত্যাবর্তনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সবুজ সঙ্কেত দেওয়া!