গাড়ুলিয়ায় ‘গদ্দার’ তকমায় পোস্টার! অতঃপর নিজের অবস্থান স্পষ্টই করে ফেললেন মুকুল ঘনিষ্ঠ সুনীল সিং
'গদ্দারকে দলে ফেরানো যাবে না...' গাড়ুলিয়ায় নোয়াপাড়ার প্রাক্তন বিধায়ক সুনীল সিংয়ের (Sunil Singh) নামে পোস্টার দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) কর্মীরা।
বারাকপুর: ‘গদ্দারকে দলে ফেরানো যাবে না…’ গাড়ুলিয়ায় নোয়াপাড়ার প্রাক্তন বিধায়ক সুনীল সিংয়ের (Sunil Singh) নামে পোস্টার দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) কর্মীরা। মুকুল রায় (Mukul Roy) তৃণমূলে ফেরার পরেই বেসুরো হয়েছেন সুনীল সিং।
পোস্টারে লেখা রয়েছে, “তোলাবাজ ও দাঙ্গাবাজ সুনীল সিংকে তৃণমূলে কংগ্রেসে নেওয়া যাবে না।” তবে শুধু গাড়ুলিয়া নয়, লেনিননগর, সূর্যসেননগর-সহ বিভিন্ন জায়গায় এই পোস্টার দেওয়ালে দেওয়ালে সাঁটানো হয়েছে। তৃণমূল কর্মীরাই এই পোস্টার মেরেছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
সুনীল সিংয়ের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বেশ জল্পনা তৈরি হয়েছে। ভোটের পর তৃণমূল ফের ক্ষমতায় এলে এই নেতারই সুর বদলাতে শুরু করে। এরপর মুকুলের তৃণমূল-যোগের পরই সুনীল সিং বলেন, “মুকুল রায় বড় মাপের নেতা।” তাতে তাঁর তৃণমূলে ফেরা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে ওঠে। বিজেপিতে থেকে ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংয়ের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের এই ধরনের মন্তব্যে স্থানীয় রাজনীতির অন্দরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
কেন হঠাৎ তাঁর গায়ে ‘দলবদলু’র তকমা পড়তে শুরু করেছে? প্রশ্ন করা হয়েছিল সুনীল সিংকেই। তাঁর বক্তব্য, “মুকুল রায় কিছুদিন আগে বিজেপিতে ছিলেন। এখন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। মুকুল রায়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো। দুই পরিবারের মধ্যেও ভালো সম্পর্ক। এই জন্যই হয়তো আমার বিরুদ্ধে এসব কথা হচ্ছে। আমি বিজেপিতে আছি, বিজেপিতে থাকব। কারোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকতেই পারে। আমার সঙ্গে বেশিরভাগ মানুষেরই ভালো সম্পর্ক রয়েছে। সেক্ষেত্রে এসব কথা হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই সুনীল সিং নামটা আরও একবার জল্পনা তুলেছিল রাজনৈতিক মহলে। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে গিয়ে দেখা করে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন সুনীল সিং। তখনই অবশ্য তাঁর ঘর ওয়াপসি নিয়ে জল্পনা উঠেছিল।
কিন্তু এ প্রসঙ্গে সুনীল সিং বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক। ওটা সৌজন্য সাক্ষাৎই ছিল। মুকুল রায়ের হাত ধরেই কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে এসেছিলাম। পরে বিজেপিতে গিয়েছি। তবে অনেক নেতা যোগ দেওয়ার আগেই বিজেপিতে গিয়েছিলাম। মুকুলদার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক। তবে আমি বিজেপিতেই আছি।”
প্রসঙ্গত, ভোট মিটলেও জারি বঙ্গ যুদ্ধ। বেসুরোদের নিয়ে এবার অস্বস্তি দুই শিবিরেই। মুকুল রায় তৃণমূলে ফেরার পর লাইনে রয়েছেন আরও অনেকে। বেসুরো বিজেপিরও বহু নেতা। এদিকে দলবদলুদের ফেরানোয় তৃণমূলে আপত্তি অনেকেরই।
কিছুদিন আগে ডোমজুড়ের বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার পড়ে। তৃণমূলে ফেরার বিরোধিতা করে পড়ে সেই পোস্টারগুলি। যদিও সেই দাবিকে খুব বেশি আমল দিতে নারাজ দলীয় নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, এই সপ্তাহেই তৃণমূলে ফিরতে পারেন রাজীব বন্দ্যওপাধ্যায়। এই বিষয়ে সব্যসাচীকে হারানো বর্তমান বিধায়ক সুজিত বসুর প্রবল আপত্তি রয়েছে, তা হাবেভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: আজ রাজভবনে বিজেপি বিধায়করা, বাংলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনা