কলকাতা: তেরো দিন আগে বাবা হয়েছিলেন। পরিবারের খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছিল। সেই আনন্দ যে বদলে যাবে এক লহমায় তা হয়ত ঠাউর করতে পারেননি কেউই। ঘটে গেল অঘটন। বাসের রেষারেষির জেরে মৃত্যু হল একই পরিবারের তিনজনের।
দশমীর দিন। তখনও প্রচুর মানুষ বেরিয়েছিলেন ঠাকুর দেখার জন্য। সেই রকমই বের হন রাহুল প্রসাদ, তাঁর শ্যালিকা, তাঁর বোন ও পরিবারের আরও অনেকে। অভিযোগ, শিয়ালদহ বিদ্যাপতি সেতুতে সেই সময় একই রুটের দুটি বাস রেষারেষি করছিল। সেই রেষারেষির জেরেই প্রাণ যায় তাঁদের। আহত হন একাধিক।
মৃতদের মধ্যে রয়েছেন অদিতি গুপ্ত (১৮),রাহুল কুমার প্রসাদ (৩০) ও নন্দিনী প্রসাদ (২৩)। অপরদিকে, আহত হয়েছেন নীলেশ গুপ্ত (১৬), ঋষি গুপ্ত (১৫), রোহিত গুপ্ত (১৮)। যদিও আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, তেরো দিন আগে বাবা হয়েছিলেন রাহুল। তেরো দিনের সেই সদ্যোজাত হারাল নিজের বাবাকে। যার জেরে শোকে বিহ্বল পরিবার থেকে প্রতিবেশি সকলে। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর বক্তব্য, বাস চালক ও খালাসি যদি কালকে বাসচালক না রেষারেষি করত তাহলে হয়ত এই প্রাণগুলো যেত না। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন তাঁরা। রাহুলের পরিবার এক সদস্য জানিয়েছে, এখনও রাহুলের স্ত্রীকে এই দুর্ঘটনার খবর দেওয়া হয়নি। সদ্য মা হয়েছেন। তাই দশমীর দিন তিনি বেরোতে পারেননি পরিবারের সঙ্গে ঠাকুর দেখতে। বাড়িতেই ছিলেন সন্তানকে নিয়ে। এরপর তিনি বলেন, ‘দশমীর দিন খাওয়া দাওয়ার পর বলেন লেবুতলার ঠাকুর দেখতে যাব। তারপর এই ঘটনা। পুলিশ যেন আরও শক্ত হয়ে এই ঘটনার তদন্ত করেন।’
প্রসঙ্গত, গতকাল রাত দেড়টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রচুর মানুষ দশমীর দিন ঠাকুর দেখতে বের হন। সেই সময় বিদ্যাপতি সেতু দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন প্রতিমা দর্শনের জন্য কয়েকজন দর্শনার্থী।
তখন একই রুটের দু’টি বাসের মধ্যে রেষারেষি চলছিল বলে খবর। সেই সময় একটি বাস একের পর এক ধাক্কা মারে পথচারীদের। যার জেরে গুরুতর আহত হন একই পরিবারের বেশ কয়েকজন। তাঁদের উদ্ধার করে এনআরএস (NRS) নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত্রি দেড়টা নাগাদ মৃত্যু হয় এক যুবতীর। এরপর আজ সকালে রাহুলের মৃত্যুর খবর সামনে আসে।