কলকাতা: একুশের ‘হাইভোল্টেজ’ নির্বাচনে একটা বড় ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করছে উত্তরবঙ্গ (Uttarbanga)। প্রায় সাড়ে তিন বছর পর গুরুংয়ের প্রত্যাবর্তন উত্তরবঙ্গের রাজনীতির পালে হাওয়া দিয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে চা-বলয়ের জমি পুনরুদ্ধার থেকে শুরু করে দলের সংগঠন চাঙ্গা করা- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) নজরে এবার শুধুই উত্তরবঙ্গ। আজ থেকে আপাতত চার দিন উত্তরবঙ্গে থাকছেন তিনি। প্রশাসনিক কর্মসূচি থেকে শুরু করে রাজনৈতিক সভা, সংগঠনে অক্সিজেন জোগাতে স্থানীয় রীতিতে অংশগ্রহণ- সবই থাকছে মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরে।
সোমবার বেলা তিনটের সময়ে দমদম বিমানবন্দর থেকে বাগডোগরার উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি। তাঁর প্রথম কর্মসূচি শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্কে উত্তরবঙ্গ উৎসবে যোগদান। গোটা উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে এই সভার গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বেশ মাটি কামড়ে ধরেছে উত্তরবঙ্গে। লক্ষ্যণীয়ভাবে তৃণমূল যেন আস্থা হারিয়েছিল উত্তরবঙ্গবাসীর।
যদিও তৃণমূল এখন বলছে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে জমি পুনরুদ্ধারে অনেকটাই সফল হয়েছে তারা। বিভিন্ন প্রকল্প ও উন্নয়নমূলক কাজের মাধ্যমে মানুষের মন জয় করতে পেরেছেন তাঁরা। এখানকার মানুষ এখন তাকিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে। কারণ বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই উত্তরবঙ্গে এসে বড় কোনও চমক দিতেই পারেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীও চাইছেন ডুয়ার্সের দিকে বিশেষ নজর দিতে।
উত্তরকন্যায় রাত্রিযাপনের পর দ্বিতীয় দিন ফালাকাটায় গণবিবাহ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি। এই দিনে আর বিশেষ কোনও কর্মসূচি নেই তাঁর। গণবিবাহ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আসলে মুখ্যমন্ত্রীর চা-বলয়ে জনসংযোগ আরও বেশি পোক্ত করতে চাইছেন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
কর্মসূচির তৃতীয় দিন অর্থাৎ শেষ দিনে একেবারেই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখবেন উত্তরবঙ্গবাসী। আলিপুরদুয়ারের প্যারেড গ্রাউন্ডে সভা করবেন তিনি। আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের ক্ষেত্রে এই সভার গুরুত্ব অপরিসীম। বলাইবাহুল্য, নেত্রীর কাছেও তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আলিপুরদুয়ারে কয়েক মাসের ব্যবধানে তিন বার করে জেলা সভাধিপতি বদল হয়েছে। অসুখ খুঁজে তার দাওয়াই দিতে মরিয়া নেত্রী। সংগঠনকে নতুন করে চাঙ্গা করতে হবে, তা ভালোভাবেই বুঝতে পারছেন পোড়খাওয়া নেত্রী।
আরও পড়ুন: ‘আমরাও জানি কীভাবে ভোট করাতে হয়…’, বিজেপিতে যোগ দিয়েই সুর চড়ালেন রাজীব
উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে কার্যত ধসে গিয়েছিল তৃণমূল। রাজগঞ্জ ও চোপড়া বিধানসভা বাদ দিয়ে উত্তরবঙ্গে আর একটিও আসনে জিততে পারেনি তৃণমূল। লক্ষ্যণীয়ভাবে ভাল ফল করে বিজেপি। তাদের দাবি, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনেও একই ফল বজায় থাকবে। সেক্ষেত্রে জমি পুনরুদ্ধারে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও মাস্টারস্ট্রোক দেন কিনা, সেটাই দখতে উৎসুক উত্তরবঙ্গ তথা বঙ্গ রাজনীতি।