বন্ধ ঘরে বিধানসভা কর্মীর ঝুলন্ত দেহ, পাশে ঝুলছে স্ত্রী-ছেলে! জোকায় ভয়ানক ঘটনা

কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও, তাঁদের দেখতে না পেয়ে সন্দেহ দানা বাঁধে। প্রথমে নিজেরাই ডাকাডাকি করেন। সাড়া না মেলায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, খবর দেন থানায়।

বন্ধ ঘরে বিধানসভা কর্মীর ঝুলন্ত দেহ, পাশে ঝুলছে স্ত্রী-ছেলে! জোকায় ভয়ানক ঘটনা
ছবি পরিবারের অ্যালবাম থেকে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 10, 2021 | 2:08 PM

কলকাতা: কলাপসিবল গেটে ভেতর থেকেই তালা দেওয়া ছিল। বাড়ির যে মানুষগুলো সকাল হতেই ঘরের কাজে লেগে পড়েন, তাঁদের এক জনকেও দেখতে পাননি প্রতিবেশীরা। প্রথমে নিজেদের মধ্যেই কথা বলছিলেন। ভেবেছিলেন ঘুম থেকে ওঠেননি বোধহয় কেউ। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও, তাঁদের দেখতে না পেয়ে সন্দেহ দানা বাঁধে। প্রথমে নিজেরাই ডাকাডাকি করেন। সাড়া না মেলায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, খবর দেন থানায়। তখনও বিপদ আঁচ করতে পারেননি তাঁরা। পুলিশ গিয়ে গেট ভেঙে একই ঘর থেকে স্বামী-স্ত্রী ও ছেলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে। সাতসকালেই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঠাকুরপুকুরের জোকার পাত্রপাড়া এলাকায়। মৃতদের নাম চন্দ্রব্রত মণ্ডল (৫০), মায়ারানি মণ্ডল (৪৫), সুপ্রিম মণ্ডল (২৮)।

নিজস্ব চিত্র

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দ্রব্রত বিধানসভার কর্মী। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, তাঁরা সকালেই ঘুম থেকে উঠে যেতেন। কিন্তু এ দিন তাঁদের কাউকেই দেখেননি তাঁরা। অনেক ডাকাডাকি করেও সাড়া না মেলায় থানায় খবর দেন। পুলিশ দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখে ঘরের দু’টি সিলিং ফ্যানে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছিলেন স্বামী-স্ত্রী আর মাঝের বিমের সঙ্গে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছিলেন ছেলে।

চন্দ্রব্রত এলাকায় ভাল মানুষ বলেই পরিচিত। মিশুকে চন্দ্রব্রত হাসিখুশিই থাকতেন। তাঁর স্ত্রীও একই রকম। আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য ছিল সংসারে। সে ক্ষেত্রে স্বচ্ছল পরিবারের এহেন পরিণতিতে বাকরুদ্ধ গোটা পাড়া। ভাবতেই পারছেন না কী কারণে এমনটা হল। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, চন্দ্রব্রতের বাজারে অনেক ধার দেনা ছিল। তা থেকেই কোনওভাবে মানসিক অবসাদ কাজ করছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

আরও একটি বিষয় পুলিশ জানতে পেরেছে। সুপ্রিয় ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পর পুণেতে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি পেয়েছিলেন। সেখানে বেশ কিছু দিন চাকরিও করেন তিনি। কিন্তু তাঁর বাবা তাঁকে কলকাতাতেই থেকে যেতেন বলেন। বাবার কথায় চাকরি ছেড়ে কলকাতায় চলে আসেন সুপ্রিয়। এখানে বহু চেষ্টা করেও চাকরি জোটাতে পারেননি তিনি। প্রচুর পাখি পুষতেন সুপ্রিয়। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন আগে পাখিগুলি সব পাড়ার ছেলে মেয়েদের দিয়ে দেন তিনি।

আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গ পুনরুদ্ধারে মরিয়া নেত্রী ময়দানে একাই, চ্যালেঞ্জ গোষ্ঠীকোন্দল, জার্সিবদল রোখা

সে ক্ষেত্রে বিষয়টি পরিকল্পিতভাবেই করা হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। আপাতত এটিকে আত্মহত্যার ঘটনা বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। তবে বাবা-মাকে খুন করে ছেলের আত্মহত্যার বিষয়টিও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেও খুনের কোনও আভাস পাচ্ছেন না বলেই জানা গিয়েছে।