কলকাতা: ডাকাতির উদ্দেশ্যে জড়ো হওয়া ৫ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করল দক্ষিণ বিধান নগর থানার পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার ধারালো অস্ত্র ও ডাকাতির সরঞ্জাম। মঙ্গলবার তাদের বিধাননগর মহকুমা আদালতে পেশ করা হবে।
পুলিশ সূত্র মারফত খবর, সোমবার রাতে দক্ষিণ বিধান নগর থানার লোহা পুলের সামনে সন্দেহজনকভাবে বেশ কয়েকজন যুবককে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই থানায় খবর দেন। পুলিশ দ্রুত এলাকায় পৌঁছয়। ততক্ষণে ওই এলাকাতেই ইতঃস্তত ঘোরাফেরা করছিল তারা। পুলিশের গাড়ি দেখতেই কিছুটা চমকে ওঠে। পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ তাড়া করে ধরে ফেলে ৫ জনকেই। প্রাথমিকভাবে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু কোনও সঙ্গতিপূর্ণ উত্তর না পাওয়ায় পুলিশের সন্দেহ হয়। এরপর তল্লাশি চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ।
ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ধারালো অস্ত্র ও ডাকাতির সরঞ্জাম। জেরায় প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীরা বেলেঘাটা ফুলবাগান ও ছয়নাভি এলাকার। বিধাননগর মহকুমা আদালতে মঙ্গলবার তাদের পেশ করা হবে। পুলিশ ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে।
ধৃতদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। এই গ্যাঙের চাঁই কে, আর কোথায় কোথায় তারা ডাকাতি করেছে, অস্ত্র তাদেরকে কে সরবরাহ করেছে, এই সব তথ্য হাতে পেতে চাইছে পুলিশ। ধৃতদের জেরা করে বড় কোনও চক্রের হদিশ মিলবে বলে আশাবাদী পুলিশ।
সম্প্রতি রাজ্যে বেশ কয়েকটি দল সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা দিনের বেলায় নানা রকম কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকে, বিভিন্ন এলাকা রেইকি করে, রাতে চালায় অপারেশন। এরকমই এক গ্যাঙের হদিশ পেয়েছে আরামবাগ পুলিশ। একাধিক অত্যাধুনিক অস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে তাদের কাছ থেকে। জেরায় উঠে এসেছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্যও।
গত ২৭ জানুয়ারি ৪ মহিলা সহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করে আরামবাগ পুলিশ। এই দুষ্কৃতী দলের কাছে নগদ এক লক্ষ ষাট হাজার টাকা, চারটি আগ্নেয়াস্ত্র, ৩৬ রাউন্ড গুলি ৬০০ গ্রাম সোনা, ১ কেজি ৫০০ গ্রামের মত রূপার গহনা পাওয়া গেছে। এছাড়াও ডাকাতি করার জন্য যে সমস্ত সরঞ্জাম লাগে সেই যাবতীয় সরঞ্জাম উদ্ধার হয়েছে।
১৬টি মোবাইল ফোনও পাওয়া গেছে ধৃতদের কাছ থেকে। পুলিশ সুপার জানান, ধৃতরা প্রত্যেক বছরই শীতের মরসুমে আসে। ডিসেম্বরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে যায় গ্যাঙের সদস্যরা। বিশেষত মফঃস্বল এলাকাগুলিতেই তারা বেশিরভাগ অপারেশন চালায়। ধৃতরা প্রত্যেকেই উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। বিগত কয়েক দিনের মধ্যে আরামবাগ, খানাকুল ও গোঘাট এলাকায় একাধিক বাড়িতে লুঠ চালিয়েছিল তারা। লুঠ হওয়া সমস্ত জিনিস, গয়না, টাকা পয়সা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বেশ কিছুদিন ধরেই আরামবাগ, খানাকুল ও গোঘাট এলাকায় একাধিক লুঠ, ডাকাতির অভিযোগ আসছিল। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। কিন্তু প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ নিশ্চিত ছিল, যে দলটি এই ঘটনার পিছনে রয়েছে, তারা কেউই এলাকার নয়। এরপর আঁটঘাট নেমে ময়দানে নামে পুলিশ। বিভিন্ন এলাকার সিভিক ভলেন্টিয়ার ও গ্রামীণ পুলিশকে কাজে লাগানো হয়। পাড়ার ওলিগলি ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করতে থাকেন সিভিক ভলেন্টিয়াররা। জানা যায়, খানাকুল এলাকাতেই একটি দল বেশ কয়েক মাস ধরে ভাড়া রয়েছে। তারা মূলত উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। দিনে বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করার নামে এলাকায় রেইকি চালাত তারা। আর রাতে হত অপারেশন।
আরও পড়ুন: Presidency University: শীত উপেক্ষা করেই রাতভর রাস্তায় শুয়ে বিক্ষোভ! আজও উত্তাল হতে পারে প্রেসিডেন্সি