কলকাতা: ডেঙ্গি অভিযানে নামতেই কাউন্সিলরের কাছে প্রেসক্রিপশন নিয়ে ছুটে এলেন ডেঙ্গি আক্রান্ত এক শিশুর মা। পাড়ার গলির ভিতরে ঢুকতেই রীতিমতো চক্ষু চড়কগাছ কাউন্সিলরের। ডেঙ্গি সচেতনতা নিয়ে নিত্যদিনের মতো রবিবারও অভিযানে নেমেছিলেন কলকাতা পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা ৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান অনিন্দ কিশোর রাউত। তিনি যখন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের গোরাপদ সরকার লেন এলাকা ঘুরছেন, তখনই ওই এলাকার এক বাসিন্দা ছুটে এলেন। তাঁর হাতে একটি প্রেসক্রিপশন। গত দু-তিন দিন ধরে সেই মহিলা বাসিন্দার সাড়ে তিন বছরের সন্তানের জ্বর।
প্রেসক্রিপশন হাতে নিতেই কাউন্সিলরের নজরে এল ওই শিশু সন্তানের ডেঙ্গি হয়েছে। বাচ্চাটাকে দেখতে পাড়ার গলির মধ্যে ঢোকেন তিনি। গলির মধ্যে ঢুকতে গিয়ে দেখলেন, যে ঘরের মধ্যে ওই শিশুটি রয়েছে, তার পাশের বাড়ির দরজা তালা বন্ধ।
আশপাশের পড়শিরা জানালেন, এই ঘরটি যিনি ভাড়া নিয়েছেন তিনি এখানে থাকেন না। এভাবে দিনের পর দরজা বন্ধ করে রেখে দেওয়া হয়েছে। যার ভিতর আবর্জনা জমে মশার আঁতুরঘর তৈরি হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে বরো চেয়ারম্যান তথা এলাকার কাউন্সিলর নিজের অফিস থেকে নোটিস আনিয়ে ৪৯৬ এ ধারায় সেখানে সাঁটিয়ে দিলেন। যেখানে অন্যান্য জায়গায় পরিদর্শন করার পর এক -দু’দিন বাদে নোটিস দেওয়া হচ্ছে।
এদিন অভিযানের মধ্যে অব্যবস্থার ছবি দেখতে পেয়ে আর দেরি করেননি এলাকার জনপ্রতিনিধি। সঙ্গে সঙ্গে নোটিশ ধরানো হয়েছে। শুধু ওই বাড়ি নয়, সংশ্লিষ্ট এলাকার পাশের গলিতে গিয়েও দেখা গেল একই অবস্থা। দুটো বাড়ির মাঝখানে এলাকার লোকজন রীতিমতো মিনি ধাপায় পরিণত করেছেন। যাবতীয় আবর্জনা দুটি বাড়ির মাঝখানে সংকীর্ণ জায়গায় ফেলেছেন। সেখানে জল জমে রয়েছে এবং মশা চারপাশে ঘুরছে।
ওই অংশের ঠিক উল্টোদিকে একটি ঘরে আবর্জনা স্তূপ। তালা বন্ধ দরজা। বাড়ির মালিক অশীতিপর বৃদ্ধা বললেন, “যিনি ভাড়াটিয়া রয়েছেন, তাঁকে বারবার বলেছি। কিন্তু তিনি আসেন না। এ ভাবেই দরজায় তালা বন্ধ হয়ে থাকে।”
এরপরই কাউন্সিলর ওই ভাড়াটিয়ার নামেও নোটিশ সংশ্লিষ্ট ঘরের দরজায় সাঁটিয়ে দেন। অনিন্দ রাউত বলেন, “একের পর এক বাড়িতে এবং আশপাশের গলির ভিতরে এই ধরনের অব্যবস্থা ছবি উঠে আসছে। এলাকার লোকজন যেখানে পারছে আবর্জনা ফেলছে। দরজা বন্ধ করে চলে যাচ্ছে এলাকার বাসিন্দারা। তারপর তাঁদের আর হুঁশ ফিরছে না, হদিশও মিলছে না। যে কারণে ওই অসচেতন বাসিন্দাদের কারণে এলাকার বাসিন্দাদের আক্রান্ত হতে হচ্ছে।”
এলাকার জনপ্রতিনিধিও বললেন, “নির্মীয়মাণ বহুতলগুলি এখন আমাদের কাছে আতঙ্কের কারণ। পাশাপাশি বিধাননগর স্টেশন এলাকায় সংক্রমণের আশঙ্কা আরও বেড়েছে।”