কলকাতা: ফের কলকাতার বুকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার। গার্ডেনরিচের বাসিন্দা নিসার আহমেদ খানের ছেলে আমির খান। তাঁর বাড়ি থেকে এখনও অবধি ১৫ কোটি টাকা উদ্ধার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। এই আমিরের সূত্র ধরেই উঠে এসেছে অনলাইন গেমিং অ্যাপ ‘ই-নাগেটস’ (E NUGGETS)-এর নাম। যেখানে টাকা খাটিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যা অজস্র। দেশের বিভিন্ন থানায় এই অ্যাপ সংক্রান্ত অভিযোগও দায়ের করেছেন প্রতারিতরা। ইডি সূত্রে খবর, এই অ্যাপ গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া যায় না। সরাসরি লিঙ্কের মাধ্যমে নামাতে হয় অ্যাপটি।
জানা গিয়েছে, যেমন কড়ি খরচ করবেন ‘ইউজার’, তেমন তাঁর মেম্বারশিপের ‘লেভেল’ হবে। ২০০ টাকা খরচেই এই অ্যাপের সাধারণ মেম্বার হতে পারেন কেউ। অর্থাৎ এই গেমিং অ্যাপে ২০০ টাকা খরচ করলে একটা ভাল অঙ্কই হাতে আসবে। সাধারণত, ২০০ টাকায় ভাল টাকা ফেরত পাওয়ার পর পরবর্তী ধাপের মেম্বারশিপের দিকে ঝুঁকতে চান ইউজাররা। এই টোপেই কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নেন অ্যাপ সংস্থার কারবারিরা।
জানা গিয়েছে, সাধারণ মেম্বারশিপ নিয়ে খেলা শুরু হত। খেলে কয়েন জিততে হত। একটা কয়েন সমান ১ টাকা। প্রথমে জেতা টাকা ওয়ালেট মারফত ট্রান্সফার করা যেত কিংবা অনলাইন শপিং করা যেত। একের পর এক কয়েন জিতে মোটা টাকা জিতলে টাকা তোলা যেত না। তখন সার্ভার প্রবলেম বলা হত।
সূত্রের খবর, ২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পার্ক স্ট্রিট থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়। আমির খান নামে এক ব্যক্তির নামে এই অভিযোগ দায়ের করা হয়। একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে মামলা হয়েছিল। কোর্টের নির্দেশেই বিষয়টি পার্ক স্ট্রিট থানায় যায়। ইডি সূত্রে খবর, আমির খান ই-নাগেটস নামে মোবাইল গেমিং অ্যাপটি লঞ্চ করেছিলেন। লোক ঠকাতেই এই গেমিং অ্যাপ বাজারে আনা বলেই ইডির হাতে তথ্য উঠে এসেছে।
এই গেমিং অ্যাপে খেলা শুরুর প্রাথমিক পর্যায়ে ইউজার ভাল টাকাই ফেরত পান। সেই টাকা পেতে খুব একটা কসরতও করতে হয় না ইউজারকে। ফলে এই খেলার প্রতি একটা আলাদা আগ্রহ তৈরি হয় তাঁদের। ইডি সূত্রে খবর, এই অ্যাপ-কর্তাদের মূল উদ্দেশ্যই হল ইউজারদের আত্মবিশ্বাস জিতে নেওয়া, যাতে তাঁরা আরও বেশি করে টাকা খাটাতে আগ্রহী হন। এরপর বড় অঙ্ক খাটিয়ে দেওয়ার পর ওই অ্যাপ কাজ করা বন্ধ করে দিত বলে ইডি তদন্তে জানতে পেরেছে।