কলকাতা: মোবাইল টাওয়ার বসানোর নাম করে ভুয়ো কল সেন্টার চালানোর অভিযোগে সিআইডির হাতে গ্রেফতার ১০।
বিধাননগর কমিশনারেটের টেকনোসিটি থানা এলাকায় চলছিল এই কল সেন্টার। এখানে মোবাইলের বদলে ল্যান্ড ফোন থেকে বহু মানুষকে ফোন করে মোবাইল টাওয়ার নাম করে ফোন করা হত। বলা হত টাওয়ার বসালে মোটা টাকা মিলবে। তবে তার প্রসেসিং ফি বাবদ কিছু টাকা লাগবে।
সেই প্রসেসিং ফি বাবদ কয়েক দফায় মোটা টাকা নিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দিত তারা। সম্প্রতি রাজ্যের এক পদস্থ পুলিশকর্তার আত্মীয়র কাছেও এরকম ফোন গিয়েছিল। তার ভিত্তিতেই খোঁজ মেলে এই কল সেন্টারের। ধৃতদের আজ আলিপুর আদালতে পেশ করা হবে। জালিয়াতি চক্রটিকে গ্রেফতার করেছে সিআইডির সাইবার শাখা।
একবালপুর থানা এলাকার ডায়মন্ড হারবার রোডে ভুয়ো কল সেন্টার খোলা হয়েছিল। সেই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ১২ জন। দীর্ঘদিন ধরেই ডায়মন্ডহারবার রোডে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে এই ভুয়ো কলসেন্টারটি চলছিল। গোপন সূত্রে খবরের ভিত্তিতে, কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা ওই বাড়িতে অভিযান চালান। সেখান থেকে বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রনিক্স সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পরপর ভুয়ো কল সেন্টারের হদিশ মিলছে কলকাতায়। এর আগে তারাতলা থেকে ভুয়ো কল সেন্টার চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় সাতজনকে। মাস খানেক আগে ওই এলাকায় এক বহুতলে অভিযান চালায়। ওয়েবেল আইটি পার্কের সেই বহুতলের তিন তলার একটি ঘরে হানা দিয়ে রীতিমতো চমকে যান পুলিশের দুঁদে কর্তারা। শহরের বুকে একেবারে সাজিয়ে খোলা হয়েছিল ভুয়ো কলসেন্টার। সাজানো ছিল একাধিক কম্পিউটার, উচ্চমানের গ্যাজেসট। একাধিক টেলিফোন ছিল। সেখান থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই আরও তথ্য বেরিয়ে আসে। পুলিশ জানতে পারে এলাকায় আরও একটি কল সেন্টার রমরমিয়ে চলছে। গোপন সূত্রে সেই খবর পেয়েই হানা দেয় পুলিশ।
কিছুদিন আগেই বিধান নগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ সেক্টর ফাইভে দুটি ভুয়ো কল সেন্টারের হদিশ পায়। সেখানে চলে রাতভর তল্লাশি। দশ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উদ্ধার হয় মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ-সহ বেশ কিছু ডিভাইস ও নগদ টাকা। নিউটাউনের একটি কল সেন্টারে হানা দিয়েও ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নিউটাউন ‘গ্রিন উড এক্সটেনশন’ বিল্ডিংয়ে হানা দেন তদন্তকারীরা। সেখান থেকেই চলছিল প্রতারণা চক্র। ভুয়ো কল সেন্টার থেকে প্রতারণা চক্রের মূল পান্ডা কমলেশ কুমার আর্য-সহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করে নিউটাউন থানার পুলিশ। পার্কস্ট্রিটে এ ভাবেই ভুয়ো কল সেন্টার চালানো হচ্ছিল। একটি বিশ্বখ্যাত সংস্থার নাম করে কল সেন্টার খুলেছিলেন ধৃতরা। সেখান থেকে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। সেখানেও কম্পিউটার সারানো কিংবা বিভিন্ন গ্যাজেটস সারানোর নাম করে প্রতারণার জালে ফেলা হত। বিদেশিদের টেক সাপোর্টের নাম করে এই প্রতারণা চলত বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘রাজ্যের কথা মেনে কাজ করলে চলবে না’, পুরভোট নিয়ে বৈঠকের পর কমিশনকে চিঠি রাজ্যপালের