কলকাতা: গোটা রাজ্যে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন দেবাঞ্জন-সনাতন। প্রতারণায় কার হাত কত বেশি লম্বা, তা মাপতেই হিমশিম খাচ্ছেন তদন্তকারীরা। বৃহস্পতিবার সকালে শহরে ধৃত আরও চার ভুয়ো সরকারি আধিকারিক। ডিএসপি পরিচয় দিয়ে ৩৫ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে চার জনের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই চার জনকে গ্রেফতার করেছে বউবাজার থানার পুলিশ। এই এক মাসে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাকড়াও করা হল ৬ প্রতারককে। প্রত্যেকেই জালিয়াতি চালাচ্ছিলেন ভুয়ো সরকারি আধিকারিকের পরিচয়ে!
আইএএস পরিচয় দিয়ে প্রতারণার জাল বিছিয়েছিলেন দেবাঞ্জন দেব। কসবার একটি ভ্যাকসিন ক্যাম্পের তদন্তে নেমে দেবাঞ্জনের টিকি খুঁজে পান তদন্তকারীরা। এরপরের গোটা ঘটনাপ্রবাহ ভাবিয়ে তুলেছে দুঁদে তদন্তকারীদের। এর রেশ এখনও তাজা। তারই মধ্যে আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে সনাতন মামলা। ভুয়ো কৌঁসুলি সেজে প্রতারণার জাল বিছিয়েছিলেন সনাতন। তিনি নিজেকে স্ট্যান্ডিং কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া পরিচয় দিয়ে, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের আইনজীবী পরিচয় দিয়ে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ।
এরপর আজ, বৃহস্পতিবার! ডিএসপি পরিচয় প্রতারণার অভিযোগ। রাজ্য পুলিশের হোম গার্ড পদে নিয়োগের জন্য বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে ৩০-৩৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত তুলেছেন চার ভুয়ো ডিএসপি। বৃহস্পতিবার সেই চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ৬ জুন বউবাজার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়। তার ভিত্তিতেই তদন্তে নামে পুলিশ।
আরও পড়ুন: মিলেছে সদস্য পদের রসিদ, সনাতন মামলায় এবার বিজেপিকে চিঠি লালবাজারের
ওই অভিযোগে বলা হয়, সমরেশ মাহাতো নামে এক ব্যক্তিকে ডিএসপি পরিচয় দিয়ে হোম গার্ডে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করেছেন ৪ ভুয়ো পুলিশ কর্তা। ওই যুবক ছাড়াও তাঁর পাঁচ বন্ধুর সঙ্গে একইরকমভাবে প্রতারণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। মেদিনীপুর ও কলকাতার চাঁদনি চকের একটি হোটেলে তাঁদের ডেকে ভুয়ো নিয়োগপত্রও দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রতারিত।
অভিযুক্ত রবি মুর্মু, শুভ্র নাগ, পরিতোষ বর্মন, মাসুন রানাকে কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখার কর্তারা গ্রেফতার করেছেন। তাঁদের কাছ কিছু ভুয়ো নথি, নকল আবেদনপত্র উদ্ধার হয়েছে। তাছাড়াও তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বেশ কয়েকটি খাকি টুপি ও বেল্ট। দেখা যাচ্ছে, সরকারি বিভিন্ন উচ্চ পদস্থ আধিকারিকের পরিচয় দিয়েই প্রতারণার জাল বুনেছেন অনেকে। রাজ্য জুড়ে একটি প্রতারণা চক্র কাজ করছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, জাল অনেক দূর ছড়িয়ে। সঠিক তদন্তে এবার ধরা পড়বে এমন অনেক প্রতারক।