AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

চলচ্চিত্রে সোনালি যুগের অবসান! ঘুমের মধ্যেই অনন্তে পাড়ি কবি-পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের

বাংলার চলচ্চিত্রে ফের নক্ষত্রপতন। প্রয়াত পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত (Buddhadeb Dasgupta)।

চলচ্চিত্রে সোনালি যুগের অবসান! ঘুমের মধ্যেই অনন্তে পাড়ি কবি-পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের
প্রয়াত পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত
| Edited By: | Updated on: Jun 10, 2021 | 3:19 PM
Share

কলকাতা: বাংলার চলচ্চিত্রে ফের নক্ষত্রপতন। প্রয়াত পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত (Buddhadeb Dasgupta)। বৃহস্পতিবার সকাল ছ’টা নাগাদ ঘুমের মধ্যেই দক্ষিণ কলকাতায় নিজের বাসভবনে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭৭।

দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন তিনি। তাঁর ডায়ালাইসিস চলছিল। বৃহস্পতিবারও তাঁর এক দফায় ডায়ালাইসিস হওয়ার কথা ছিল। সকালে বাড়িতেই ছিলেন তিনি। ঘুম থেকে তাঁকে ডাকতে যান স্ত্রী। কিন্তু সাড়া না পাওয়ায় চিকিৎসককে ডাকা হয়। তারপরই দুঃসংবাদ।

‘তাহাদের কথা’ ছবিতে তাঁর অবিস্মরণীয় কাজ দর্শকদের মুগ্ধ করে। ‘নিম অন্নপূর্ণা’, ‘গৃহযুদ্ধ’, ‘ফেরা’, ‘বাঘ বাহাদুর’, ‘উত্তরা’ তাঁর উল্লেখযোগ্য ছবি। ১৯৮৯ সালে ‘বাঘ বাহাদুর’, ১৯৯৩ সালে ‘চরাচর’, ১৯৯৭ সালে ‘লাল দরজা’ দর্শকদের মনে দাগ কেটেছে।

তাঁর পড়াশোনার বিষয় ছিল অর্থনীতি। স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করে পড়াশোনা করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইকোনমিক্সের ‘রসকসহীন’ নানান কঠিন তত্ত্ব নিয়ে কাটাছেঁড়া করাই ছিল তাঁর কাজ। অধ্যাপনা দিয়ে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন পরিচালক।  কিন্তু অধ্যাপনার অবসরে যখন নিজের জন্য সময় বার করতেন পরিচালক, তাঁকে ভাবাত বাস্তবতা, রাজনৈতিক-সামাজিক প্রেক্ষাপট!

এক্কেবারে রোজনামচার ঘটনাকে অন্য আঙ্গিকে ভাবতে ভালোবাসতেন বুদ্ধবাবু। আর তা থেকে ছবি বানানোর শখ। মানুষের সামনে অত্যন্ত সাবলীলভাবে পরিবেশন করতেন সমাজের গল্প। তাঁর সহজ উপস্থাপনায় ফুটে উঠত আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটের নানার দিক। সবার আগে কবি ছিলেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। ঘনিষ্ঠরা বলেন, কবিতাই তাঁর প্রথম প্রেম। সেলুলয়েডে কবিতাই ফুটিয়ে তুলতেন তিনি।

১৯৬৮ সালে ১০ মিনিটের একটি ডকুমেন্টারি ‘দ্য় কন্তিনেন্ত অব লাভ’ দিয়ে চলচ্চিত্র কেরিয়ার শুরু করেছিলেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত।  ১৯৭৮ সালে তাঁর প্রথম সম্পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ফিচার ফিল্ম ‘দূরত্ব’ প্রকাশ্যে আসে। ফিচার ছবির মধ্যে তাঁর অনন্য সৃষ্টি ‘কালপুরুষ’, ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’, ‘তাহাদের কথা’, ‘জানালা’।

২০০৮ সালের ২৭ মে স্পেনের মাদ্রিদ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তকে জীবনকালের কৃতিত্বের সম্মাননা প্রদান করা হয়। ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হন তিনি। তাঁর প্রয়াণে গভীরভাবে শোকাহত চলচ্চিত্র মহল।

পরিচালকের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।

বুদ্ধবাবুর স্ত্রী সোহিনী দাশগুপ্ত (নীল টি শার্ট পরিহিত)

অভিনেতা দীপঙ্কর দে বলেন, “কিছু বলার নেই। আমি খুবই মর্মাহত। তাহাদের কথা বলে একটা ছবিতেই কাজ করেছিলাম। মিঠুন আর আমি। খুব পরিশ্রম করে, যত্ন নিয়ে প্রত্যেকটি শট নিতেন। ভোর ৪টেয় উঠতেন। অসম্ভব পরিশ্রম করতে পারতেন। তাঁর সমস্ত কাজে একটা কাব্যগুণ ছিল। নিজে ভাল কবিতা লিখতে পারতেন তো! অনান্য পরিচালকদের থেকে অনেক উপরে…”

অভিনেতা কৌশিক সেন বলেন, “তাহাদের কথা ছবিটার কথা মনে পড়ছে। তাঁর অনেক ছবির কথা বলা যায়। খুব বড় মাপের কবি ছিলেন। ওঁ আমাদের থিয়েটর দেখতে এসেছিলেন একাধিকবার। খুব মনে পড়ছে সেসব কথা। নিজের মনে যে বিষয়টা আসত, তার ভিত্তিতেই ছবি বানাতেন। কোনও কিছুর সঙ্গে আপোস করেননি। তার জন্য অনেক কম কাজ করেছেন শেষের দিকে।”