কলকাতা: জটিলতা কাটলেও প্রকল্পের কাজ বারবার ব্যাহত। ফলে, জোকা থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা চালু হওয়ার দিন পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের থেকে আরও দু’বছর পরিষেবা পিছিয়ে যেতে পারে বলে জানা যাচ্ছে।
জোকা-এসপ্ল্যানেড মেট্রো প্রকল্পের অধীনে ইতিমধ্যে জোকা থেকে মাঝেরহাট পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা শুরু হয়ে গিয়েছে। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৭.৭৫ কিলোমিটার। কিন্তু নানা জটিলতার ফাঁসে আটকে মাঝেরহাট থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত বাকি অংশের কাজ। সেই অংশের দৈর্ঘ্য প্রায় ৬.২ কিলোমিটার। সেই জটিলতা অবশেষে কেটেছে। ময়দান মার্কেট স্থানান্তর বা বৃক্ষ ছেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক নির্দেশ রয়েছে। এইসব জটিলতার কারণেই সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের।
সংশ্লিষ্ট প্রকল্প রূপায়ণকারী সংস্থা ‘রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড’ জানিয়েছে, ভারতের বুকে এই প্রথম কোনও প্রকল্প, যেখানে প্রায় ৬৪৫টি গাছ শিকড়সহ তুলে আবার রোপণ করা হয়েছে। শিয়ালদহ কামারডাঙা এলাকায় গাছগুলি লাগানো হয়েছে।
মাঝেরহাট থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত যে কাজ হচ্ছে, তা দুটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।
মাঝেরহাট থেকে প্রস্তাবিত পার্ক স্ট্রিট মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত টানেল বোরিং-এর মাধ্যমে কাজ হচ্ছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোতে যেভাবে টানেল বোরিং ব্যবহার করা হয়েছে, তেমনই এই কাজেও একই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
আশপাশে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল বা শহিদ মিনারের মতো স্থাপত্য রয়েছে। সেগুলিতে যাতে কোনও রকম সমস্যা না হয়, তার জন্য অত্যাধুনিক কম্পনরোধী যন্ত্রের ব্যবহার করা হচ্ছে টানেল বোরিং কাজের জন্য।
এদিকে, ডায়মন্ড হারবার রোডের দিক থেকে আগামী ২০২৫ চালের মার্চ মাসের শেষে অথবা এপ্রিল মাসের শুরুতে টানেল বোরিং-এর কাজ শুরু হবে। আদিগঙ্গার তলা দিয়ে সেই টানেল তৈরির জন্য বোরিং মেশিন ভূগর্ভ খনন করতে করতে ভিক্টোরিয়া কাছে এসে পৌঁছবে আগামী বছরের জুন মাসে।
অন্যদিকে পার্কস্ট্রিট থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত কাজ হবে কাট এন্ড কভার ট্যানেলের মাধ্যমে। অর্থাৎ ভূগর্ভের ওপরে সম্পূর্ণ মাটি খনন করে সেখানে টানেল বসানো হবে। তবে এই প্রকল্প যেখানে ২০২৭ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল, তা পিছিয়ে ২০২৯ সাল হয়ে যাবে বলেই জানা যাচ্ছে। মাঝেরহাট স্টেশনের পর খিদিরপুর, ভিক্টোরিয়া, পার্ক স্ট্রিট এবং এসপ্ল্যানেড-এই চারটি স্টেশন তৈরি হচ্ছে।
২০১১ সালে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। সেই সময় প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৬১৯ কোটি টাকা। সেই ব্যয় বৃদ্ধি পেতে পেতে এখন দাঁড়িয়েছে ৪৮৩৫ কোটি টাকা। সময় বেড়ে গেলে খরচ বাড়বে আরও।