কলকাতা: করোনার (Covid-19) ভয়াবহতা কাটিয়ে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে শহর কলকাতা। ইতিমধ্যেই লোকাল ট্রেন চালু হয়েছে। সড়ক পরিবহণেও ফিরেছে গতি। মেট্রোর সংখ্যা ও সময় আবারও অনেকটাই বেড়েছে। এবার ফের মেট্রোতে টোকেন পরিষেবা ফেরানোর পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। কী ভাবে তা ফেরানো যায় তা নিয়ে চিন্তা ভাবনাও করছে কর্তৃপক্ষ।
করোনাকালে বন্ধ রাখা হয় টোকেন ব্যবহার। স্মার্ট কার্ডই আপাতত মেট্রোয় যাতায়াতের ক্ষেত্রে একমাত্র ভরসা। তবে ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের সুপারিশে ফের টোকেন চালুর পথে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, কয়েকদিন আগেই রাজ্য সরকারের ক্রেতা সুরক্ষা দফতর এর তরফে মেট্রোর কাছে টোকেন চালু করার সুপারিশ করা হয়। সেই ডাকেই সাড়া দিতে চলেছে কলকাতা মেট্রো।
বিভিন্ন শ্রেণির যাত্রীর জন্যই সব সময় নিজেদের প্রস্তুত রাখে মেট্রো। সে কারণেই নিয়মিত যাঁরা যাতায়াত করেন , তাঁদের সুবিধার কথা চিন্তা করে যেমন স্মার্ট কার্ড রাখা হয়েছে। তেমনই মাঝে মধ্যে যাঁরা মেট্রো পরিষেবা নেন তাঁদের জন্য রয়েছে টোকেনের ব্যবস্থাও।
কিন্তু করোনার জন্য আপাতত শুধু মাত্র স্মার্ট কার্ড রয়েছে এমন যাত্রীই মেট্রোয় ওঠার অনুমতি পান। টোকেন দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ধীরে ধীরে যখন সমস্ত পরিষেবা স্বাভাবিক হচ্ছে, সেখানে শুধুমাত্র টোকেন পরিষেবা বন্ধ রেখে খুব একটা উপকার কিছু হচ্ছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল যাত্রীদের মনেই।
প্রতিদিনের যাঁরা যাত্রী তাঁদের স্মার্ট কার্ডে সুবিধা হলেও, যাঁরা রোজ মেট্রোয় যাতায়াত করেন না তাঁদের জন্য যথেষ্ট সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে লোকাল ট্রেন চালু হওয়ার পর মেট্রোয় ভিড় বাড়ছে। ফলে এ ক্ষেত্রেও সমস্ত পরিষেবা দ্রুত স্বাভাবিক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
সম্প্রতি ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের সঙ্গে মেট্রো কর্তৃপক্ষের এক বৈঠক হয়। সেখানেই সংশ্লিষ্ট দফতরের তরফে মেট্রো কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হয়েছিল, টোকেন চালু করার ব্যাপারে যেন ভাবনাচিন্তা করে তারা। সেই সুপারিশ সাদরে গ্রহণ করেছে মেট্রো।
পরিকল্পনা রয়েছে, কী ভাবে সংক্রমণের দিকটি বাঁচিয়ে টোকেন পরিষেবা আবারও চালু করা যায়। কারণ, টোকেন এক হাত থেকে অন্য হাতে যায়। ফলে স্বাস্থ্যবিধি এ ক্ষেত্রে উলঙ্ঘনের সম্ভাবনাও থেকেই যাবে। সমস্ত দিক বিচার করে, করোনা সংক্রমণের গ্রাফ কতটা নামছে সেদিকে নজর রেখেই টোকেন চালুর কথা ভাবছে তারা।
মেট্রো রেল যাত্রীদের সুবিধার জন্য সোমবার অর্থাৎ আজ থেকে আপ ও ডাউন মিলিয়ে ২৬৬টি ট্রেনের বদলে ২৭২টি ট্রেন চলাচল করবে। এই বর্ধিত মেট্রো চলবে সোমবার থেকে শুক্রবার। সোমবার থেকে সকাল ৭.৩০ -এর পরিবর্তে ৭.০০ টায় মেট্রো পরিষেবা শুরু হয়েছে। ব্যস্ত সময়ে এবং সকালে ৫ মিনিট অন্তর মেট্রো পরিষেবা মিলবে। সকাল ৭.০০ টায় দমদম থেকে দক্ষিণেশ্বর, কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর, দমদম থেকে কবি সুভাষ এবং দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ-এর মধ্যে প্রথম মেট্রো চলছে। অন্যদিকে, রাত ৯.১৮ মিনিটে দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ, ৯.৩০ মিনিটে দমদম থেকে কবি সুভাষ এবং কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর শেষ মেট্রো পাওয়া যাবে।
আগামী ২০ নভেম্বর শনিবার থেকে আপ ও ডাউন মিলিয়ে ২১৪টির পরিবর্তে ২২০টি মেট্রো চলবে। এই পরিষেবা শুধুমাত্র শনিবারের জন্যই প্রযোজ্য। শনিবার সকাল এবং ব্যস্ত সময়ে ৭ মিনিট অন্তর মেট্রো পাওয়া যাবে। প্রতি শনিবার সকাল ৭.০০ টায় দমদম থেকে দক্ষিণেশ্বর, কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর, দমদম থেকে কবি সুভাষ এবং দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষের মধ্যে প্রথম মেট্রো পরিষেবা মিলবে।
অন্যদিকে, রাত ৯.১৮ মিনিটে দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ, ৯.৩০ মিনিটে দমদম থেকে কবি সুভাষ ও কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বরের মধ্যে শেষ মেট্রো পরিষেবা মিলবে। রবিবারে মেট্রো পরিষেবায় সময়ের কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। এমনকি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পরিষেবাও অপরিবর্তিত থাকছে। শুধুমাত্র স্মার্টকার্ড রয়েছে এমন যাত্রীই মেট্রোতে যাতায়াত করতে পারবেন। কোনও টোকেন টিকিট দেওয়া হবে না।
আরও পড়ুন: Tenure of ED and CBI Chief: ইডি-সিবিআই অধিকর্তাদের কার্যকালের মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে সংসদে সরব হবে তৃণমূল