কলকাতা: অসহায়, আর্তদের জন্য কি তবে আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ হয়ে উঠল কলকাতা পুরসভা? আরব্য রজনীর উপন্যাসে আশ্চর্য প্রদীপ ঘসলেই মনোবাসনা পূরণ হতো। এ বার কলকাতা পুরসভায় নিগমের ফোন করে অসহায় করোনা রোগীরা প্রয়োজনীয় খাবার চাইলে সেটাও মিলছে মুফতে। আর যে খাবার মিলছে, তা যে সে নয়। বিনামূল্যে রীতিমতো পুষ্টিকর খাবার তালিকা মিলিয়ে পাঠানো হচ্ছে। শুনলে অবাক হবেন, কলকাতা পুর নিগমের রোগীকে পাঠানো খাবারের তালিকায় রয়েছে ডিম-সোয়াবিন, এমনকী কাজু কিসমিস পেস্তাও জায়গা পেয়েছে সেই তালিকায়।
সূত্রের খবর, পুরসভার এই সাহায্য পাওয়া রোগীর নাম ইন্দ্রনীল নন্দী এবং তার বৃদ্ধ মা। তাঁদের বাড়ি দক্ষিণ কলকাতার ব্রহ্মপুর এলাকায়। বছর দুয়েক আগেই নাগরিক পরিষেবার জন্য যে পুরসভার পক্ষ থেকে যে সরাসরি মেয়রের সঙ্গে কথা বলার সুবিধা দেওয়া হয়েছিল, সেই হেল্পলাইনেই ফোন করেন ইন্দ্রনীল নন্দী।
ফোন করে ইন্দ্রনীল পুর কর্তৃপক্ষকে জানান, তিনি এবং তার মা করোনায় আক্রান্ত হয়ে গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের পরিবারে অন্য কোনও সদস্য নেই যারা খাবারের বন্দোবস্ত করতে পারে। সেই সঙ্গেই পারিবারে আর্থিক অনটন রয়েছে। এর মধ্যে আবার ডাক্তার পরামর্শ দিয়েছেন যে করোনা আক্রান্ত মা ও ছেলেকে এই মুহূর্তে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে প্রয়োজনে। কিন্তু অর্থের অভাব তো জাঁকিয়ে ধরেছে পরিবারকে। পুষ্টিকর খাবারও খেতে পারছেন না তাঁরা। উপায়ন্তর হয়ে পুষ্টিকর খাবারের আবেদন জানিয়ে পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের কাছে ফোনে আবেদন জানান এই যুবক।
মা-ছেলের করুণ আবেদনে সাড়া দিয়ে পুরসভা কর্তৃপক্ষ ১১টি সামগ্রীর তালিকা ধরে খাবার পাঠায় অসহায় মা ও ছেলেকে। সেই তালিকায় রয়েছে। পুরসভা সূত্রে খবর, সেই তালিকায় চিঁড়ে, মুড়ি, চিনি, গুড়, বিস্কুট, ছাতু, চানাচুর তো রয়েছেই। সেই সঙ্গে সোয়াবিন, ডিম, কাজু ও পেস্তাও রয়েছে তালিকায়। পুরসভার পক্ষ থেকে তালিকা ধরে খাবার চলে আসায় স্বভাবতই যারপরনাই খুশি হয়েছেন ব্রক্ষ্মপুরের ওই বাসিন্দা।
প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণের প্রথম ঢেউয়ের আগে ২০১৯ সালেই টক টু মেয়র নামক এই কর্মসূচির সূচনা করেছিলেন পুরসভার তৎকালীন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বর্তমানে যদিও তিনি মেয়র পদে নেই। পুরবোর্ডের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ায় সেখানে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। মাঝে বিধানসভা ভোটের সময় কিছুদিন সরকারি আধিকারিকদের সেখানে নিয়োগ করা হয়েছিল। তবে ভোট মিটতেই ফিরে আসেন ফিরহাদ। এখন অবশ্য তিনি মেয়র নয়, পুরসভার প্রশাসক। তবে টক টু মেয়রের নামে যে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়েছিল, তা এখনও অব্যাহত রয়েছে। এর সুবিধার মাধ্যমে 18005721213 ও 18003451213, এই দুটি নম্বরে ফোন করে সোজা প্রশাসকের কাচে সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে জানানো যায়। আরও পড়ুন: ভোটের পরই বারবার তৃণমূলের অফার, সাক্ষাৎকারে অকপট নওশাদ