কলকাতা: কোভিডকালে ভোট। তাই কড়া রাজ্য নির্বাচন কমিশনও। সোমবারই এ নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে কমিশন।প্রাথমিক ভাবে সেখানে ঠিক হয়েছে, ভোটের ১৭ দিন আগে করোনা রোগীদের তালিকা তৈরি করা হবে। যাঁরা করোনা আক্রান্ত রয়েছেন, তাঁদের পৃথক সময় করে ভোটের দিন নিয়ে যাওয়া হবে বুথে। তার জন্য নির্বাচনের দিন ১৯ ডিসেম্বর প্রত্যেক বরোতে তিনটি করে অ্যাম্বুল্যান্স থাকবে।
কলকাতা পুরভোট ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলির যেমন তৎপরতা তুঙ্গে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনও একই ভাবে তৎপরতার সঙ্গে প্রস্তুতি সারছে। সোমবারই ভোট সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় নিয়ে এক বৈঠক হয়। রাজ্য নির্বাচন কমিশনে কলকাতা পুরভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষকরা সেই বৈঠকে বসেন। তার আগে এদিন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গেও তাঁরা বৈঠক করেন।
যেহেতু করোনার আবহেই ভোটগ্রহণ, সেহেতু সতর্ক কমিশনও। বিশেষ করে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার তুলনায় কলকাতায় দৈনিক সংক্রমণ অনেকটাই বেশি। সেখানে সুষ্ঠুভাবে বিধিনিষেধ মেনে ভোট করানোটাও একটা চ্যালেঞ্জ। সে কারণেই সোমবারের বৈঠকে প্রাথমিক ভাবে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কোভিড পজিটিভ রোগীদের ভোটদানের বিষয়টি।
সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে সোমবারের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, কোভিড আক্রান্তদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে। ভোটের দিন প্রত্যেক বরোতে তিনটি করে অ্যাম্বুল্যান্স থাকবে। সেই অ্যাম্বুল্যান্স করেই ভোটের দিন শেষ এক ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তদের বুথে নিয়ে যাওয়া হবে। এ ছাড়া ২ ডিসেম্বর থেকে কোথায় কোথায় করোনা রোগী রয়েছেন, সে তালিকা তৈরির কাজও শুরু হয়ে যাবে। এমনিতেই স্বাস্থ্য দফতরের কাছে তালিকা থাকে। তাই এ কাজ খুব একটা কঠিন হবে না।
একই সঙ্গে ঠিক হয়েছে, যে সমস্ত পুরপ্রতিনিধিরা ভোটের দায়িত্বে থাকবেন তাঁদের জন্য সেক্টর অফিসে ভোটের ৩-৪ দিন আগে টিকাকরণের বন্দোবস্ত করা হবে। এই প্রথমবার কমিশন নিজেদের উদ্যোগে এই টিকাপ্রদানের ব্যবস্থা করবে। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলেই পুরো বিষয়টি হবে। প্রতিটি বুথে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, শরীরের তাপমাত্রামাপক যন্ত্রও অত্যাবশ্যক।
এ ছাড়াও সোমবার কলকাতা পুরভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষকদের বৈঠকে ঠিক হয় ১৬টি বরোর জন্য ১৬ জন সাধারণ পর্যবেক্ষক থাকবেন। এই ১৬ জন সাধারণ পর্যবেক্ষক ডব্লুবিসিএস অফিসার পদের। সঙ্গে থাকবেন চারজন বিশেষ পর্যবেক্ষক বা স্পেশাল অবজারভার। এই চারজনের অধীনে চারটি করে বরো থাকবে। বিশেষ পর্যবেক্ষক বা স্পেশাল অবজারভার এই চারজনের অধীনে চারটি করে বরো থাকবে।
অর্থাৎ ১৬ জন সাধারণ পর্যবেক্ষকের মাথায় থাকবেন এই চারজন। এই চারজনই আইএএস অফিসার। ১ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজে যোগ দেবেন তাঁরা। পর্যবেক্ষক করা হয়েছে যুগ্ম সচিব বা তাঁর থেকে উঁচু পদমর্যাদার অফিসারদের। এদিনের বৈঠকে ১৭ জন যোগ দেন। একজন বাইরে থেকে এসেছিলেন বিশেষ পর্যবেক্ষক। দু’জন সাধারণ পর্যবেক্ষক। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস এদিন বলেন, পর্যবেক্ষকরা কমিশনের চোখ ও কান। সেভাবেই ভোট পরিচালনা করতে হবে।
মঙ্গলবার ফের বৈঠক রয়েছে। এদিনের বৈঠকে জেলাশাসকের প্রতিনিধি, স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প দফতর এবং কলকাতা পুরসভার প্রতিনিধি থাকবেন।
আরও পড়ুন: ফের প্রার্থী বদল কংগ্রেসের, তৃতীয় দফার তালিকায় পাঁচ ওয়ার্ড বদল