কলকাতা: লক্ষ্মীর ভাণ্ডার (Lakshmi Bhandar) নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের অভিজ্ঞতা বুঝতে চাইছে তৃণমূল। আর তা বুঝতেই সরকারি কর্মচারীদের সংগঠনের রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)।
বিধানসভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে দুপুর ২টো নাগাদ এই বৈঠক হতে পারে। সরকারি কর্মচারীদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই সরকারি কর্মচারীদের ভবিষ্যত্ রূপরেখা তৈরি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। গত ১৬ অগস্ট লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম দেওয়া শুরু হয়। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সের পিছিয়ে পড়া জনজাতির মহিলাদের ১০০০ টাকা এবং সাধারণ মহিলাদের ৫০০ টাকা করে মাসিক ভাতা দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের ফর্ম মিলবে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে। প্রথম দিন থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশৃঙ্খলা ও দুর্নীতির খবর আসে। তারপরই এই উদ্যোগ।
এদিকে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম বিলি করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে । ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের নানুর এলাকায়। জানা গিয়েছে, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই ফর্ম দিয়ে আসেন।
গোটা বিষয়ে প্রশ্ন উঠছে, সরকারি এই ফ্রম তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের হাতে গেল কীভাবে? বারবার মুখ্যমন্ত্রী কড়া নির্দেশ দেওয়ার পরও পরিস্থিতির বদল হয়নি । স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নানুরের বন্দর এলাকায় গ্রামে গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষের হাতে লক্ষ্মীর ভান্ডারের ফর্ম দিয়ে আসছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলা প্রশাসনকে অবশ্য এ নিয়ে কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে।
তবে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই এই প্রকল্পের দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে ফর্ম নিয়ে জালিয়াতির জেরে শিলিগুড়িতে এক তৃণমূল নেতাকে সপরিবারে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ, বাপ্পা দে সরকার নামে ওই তৃণমূল নেতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা কিছুদিন ধরেই বাড়ি থেকে ফর্ম বিক্রি করছিলেন। এবং ফর্ম জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে টাকা দিতে বাধ্য করেছিলেন। প্রকল্পের সুবিধা পেতে ইচ্ছুক বাসিন্দাদের ফর্মের দাম হিসেবে ১০০ টাকা, ফর্ম ফিল আপ করার জন্য আরও ২০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছিল। এ ঘটনা জানাজানি হতেই শুরু হয় হইচই। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশ।
সোমবারও হাতনাতে ধরা পড়েন আরেক তৃণমূল নেতা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খেজুরি বিধানসভার হলুদবাড়ি অঞ্চলে রাতে তৃণমূলের অঞ্চল প্রধান ও এক সিভিক ভলেন্টিয়ারকে সঙ্গে নিয়ে টাকার বিনিময়ে ফর্ম বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগ এড়িয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
কোথাও আবার ফর্মের লাইনেই ধরা পড়েছে চরম বিশৃঙ্খলা। ধস্তাধস্তি, হুড়োহুড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনেক মহিলা। মুর্শিদাবাদে সম্প্রতি ফর্ম বিলির লাইনে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এই সব বিষয়েই উদ্বিগ্ন প্রশাসন। গোটা ঘটনার বিবরণ এবার সরকারি আধিকারিকদের হাত থেকে বিস্তারিত শুনতে চান তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপরই ঠিক করা হবে পরবর্তী রূপরেখা। আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা: চেয়েও মেলেনি পুলিশি-রিপোর্ট, এবার জেলা ঘুরে সরাসরি আক্রান্তদের কাছে সিবিআই