কলকাতা: কলকাতা পুলিশের ক্রমেই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। শেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৬০। ৭ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কলকাতা পুলিশে এই মুহূর্তে আক্রান্তের সংখ্যা ২৬৮ জন। কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ে এখনও পর্যন্ত ২৯৫ জন পুলিশ কর্মী সংক্রমিত হয়েছেন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২৭ জন।
পরিসংখ্যানটা দেখলেই বোঝা যায়, ঠিক কতটা গতিতে বাড়ছে সংক্রমণ। গত সোমবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কলকাতা পুলিশে কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন ২২ জন পুলিশকর্মী। ডিসি ট্রাফিক সাউথের রিপোর্ট পজিটিভ আসে সোমবার। মোট আক্রান্ত ছিলেন ৮৩ জন। কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন অ্যাডিশনাল সিপি দেবাশিস বড়াল। সূত্রের খবর, তিনি এখন রয়েছেন হোম আইসোলেশনে। পরিসংখ্য়ান দেখেই বোঝা যাচ্ছে, এক সপ্তাহে ঠিক কতটা বেড়েছে পরিসংখ্যান।
কলকাতায় লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। দুই ২৪ পরগনার অবস্থাও বেসামাল। এর আগের পর্যায়েও মারাত্মকভাবে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিল ‘কলকাতা পুলিশ’! মৃত্যু হয়েছিল একাধিক পুলিশকর্মী-কর্তার। এবার মৃত্যুর হার কম। তবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে হু হু করে। কলকাতায় মারাত্মক ভাবে ছড়াচ্ছে করোনা। যা নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা। আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি কলকাতায়। শুক্রবার, কলকাতায় পজিটিভিটি রেট ছিল সাড়ে ১৮ শতাংশ। আর এবার সেই সংখ্যা ২৬ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ, যাঁরা কোভিড টেস্ট করছেন, তাঁদের প্রতি চার জনের মধ্যে এক জন পজিটিভ।
একে একে প্রথম সারির করোনা-যোদ্ধারা আক্রান্ত হতে শুরু করেছেন। স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসকদের মধ্যে করোনার প্রকোপ সমানে বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু এই সব ক্ষেত্রে অনেক আগে টিকাকরণ শুরু হয়েছিল, তাই টিকার কার্যকারিতা কমে যাওয়াতেই সম্ভবত ফের আক্রান্ত হচ্ছেন পুলিশ বা চিকিৎসকেরা। ইতিমধ্য়েই কলকাতা পুলিশের কর্মী ও আধিকারিকদের একটা বড় অংশ আক্রান্ত হয়েছেন কোভিডে। তাই এবার, পরিস্থিতি সামাল দিতে নয়া সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কলকাতা পুলিশ।
পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক, লালবাজারের কর্তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এবার এমন ব্যবস্থা করা হবে, যাতে সশরীরে হাজির না হয়েই অভিযোগ দায়ের করতে পারেন সাধারণ মানুষ। এতে শারীরিক দূরত্ব বজায় থাকবে। থানায় বাড়বে না ভিড়। ফোন করেই অভিযোগ জানানো যাবে। এর জন্য থানাগুলিতে একটি করে স্মার্টফোন দেওয়া হবে। মূলত ছোট কোনও অভিযোগের ক্ষেত্রে নাগরিকদের থানায় যেতে হবে না। কিছু হারিয়ে গেলে, মোবাইল খোয়া গেলে ফোনেই অভিযোগ জানানো যাবে।
লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, এই পদ্ধতির জন্য প্রত্যেক থানায় একটি করে স্মার্টফোন দেওয়া হবে। সেই নম্বরে ফোন করেই অভিযোগ জানাতে পারবেন এলাকার মানুষ। থানার দায়িত্ব নিজস্ব এলাকায় নাগরিকদের সেই ফোন নম্বর জানিয়ে দেওয়া। প্রয়োজনে মাইকিং করে বা পোস্টার দিয়ে নম্বর জানাতে হবে। থানার বাইরেও লেখা থাকবে ওই নম্বর। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের সব থানায় স্মার্টফোন পাটানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।