কলকাতা: গুলাবের ধাক্কা তেমন না লাগলেও দুর্যোগের আশঙ্কা এখনও কাটেনি। আগামীকাল কলকাতায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আর এতেই ঘুম উড়েছে প্রশাসনের। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। সজাগ কলকাতা পুলিশও। শহরের যে কোনও পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ২২ টি দল প্রস্তুত রাখছে কলকাতা পুলিশ।
এর মধ্যে ভবানীপুর থানায় প্রস্তুত রাখা হচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ২ টি দল। কালীঘাট থানাতেও থাকছে ২ টি দল। এছাড়া আলিপুর, ওয়াটগঞ্জ, একবালপুর, নিউমার্কেট, পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকায় একটি করে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দল প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। এই সবকটি থানা এলাকাই ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। এছাড়া বডি গার্ড লাইনেও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একটি দলকে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।
এর পাশাপাশি, কলকাতার ৯ টি ডিভিশনে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দল প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। দক্ষিণ শাখার জন্য বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে তৈরি রাখা হচ্ছে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে। এছাড়া আরও তিনটি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দলকে ‘স্ট্যান্ড বাই’ হিসেবে রাখা হচ্ছে। প্রয়োজন অনুযায়ী পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ওই দলগুলিকে ব্যবহার করা হবে।
বিপর্যয় মোকাবিলা দলগুলিকে মূলত গাছকাটার যন্ত্র, দড়ি, হাতুড়ি, রেন জ্যাকেট, ছাতা, গামবুট-সহ সব রকম ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে প্রত্যেক থানা ও ট্র্যাফিক গার্ডেও এই জিনিসগুলি মজুত রাখতে বলা হয়েছে। থানাগুলিকে বলা হয়েছে, তাদের এলাকায় যে বাড়িগুলি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে, এমন বাড়ির তালিকা তৈরি করে রাখতে। সেখানে থাকা মানুষদের বাড়ি থেকে সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে বলা হয়েছে।
এর পাশাপাশি কলকাতা পৌরনিগম ও সেচ দফতরের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে সব থানাকে।
এদিকে নিম্নচাপ ও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাসের কারণে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১) সকাল থেকে বিদ্যুৎ ভবনে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে যা দিনে ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে। এদিন সকাল থেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এছাড়াও ছিলেন বিদ্যুৎ দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব শ্রী সুরেশ কুমার, সি.এম.ডি-ডব্লু.বি.এস.ই.ডি.সি.এল শ্রী শান্তনু বসু ও বিদ্যুৎ দফতরের অন্যান্য আধিকারিকরা।
ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে সব জেলার বিদ্যুতের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন মন্ত্রী। আজ থেকে তিন দিন এই কন্ট্রোল রুম চলবে বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে মন্ত্রী জানান, সমস্ত অঞ্চলে মাইকিংয়ের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করা হয়েছে ও গ্রাহকদের এসএমএসের মাধ্যমেও অবগত করা হয়েছে। এছাড়াও বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রত্যেকটি জেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা থাকবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। দিনে ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে এই কন্ট্রোল রুমগুলি। প্রয়োজনে তা আরও কয়েকদিন বাড়নো হতে পারে। এছাড়াও জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে বিদ্যুত দফতরের জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের সমন্বয় সাধন করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিবের পক্ষ থেকে সব জেলার জেলা শাসক, পুলিশ সুপার, পৌরনিগম, জেলা পরিষদ ও সিইএসসিকে পোষ্ট, ফিডার বক্স, মিটার বক্স ও বিদ্যুতের তার যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরীক্ষা করার জন্য অ্যাডভাইজ়রি পাঠান হয়েছে।
আরও পড়ুন: WB Power Supply Department: বৃহস্পতি পর্যন্ত খোলা কন্ট্রোল রুম, চালু টোল ফ্রি নম্বর