সুজয় পাল : বঙ্গোপসাগরে আরও শক্তি বাড়াচ্ছে ঘূর্ণাবর্ত। আগামিকালই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় সাইক্লোন গুলাবে পরিণত হতে পারে এই ঘূর্ণাবর্ত। তার উপর রয়েছে নিম্নচাপের ভ্রুকুটি। এবার জোড়া ধাক্কা মোকাবিলায় প্রস্তুত কলকাতা পুলিশ। আপাতত আকাশ আংশিক পরিষ্কার থাকলেও সপ্তাহান্তে ফের ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আর তার জন্য এবার আগে থেকে তৈরি লালবাজার। সবরকম প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্য সজাগ থাকছে কলকাতা পুলিশ।
শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে লালবাজারে। লালবাজার কন্ট্রোল রুমে ‘ইউনিফায়েড কমান্ড সেন্টার’ খোলা হয়েছে। সেখানে আজ থেকেই কলকাতা পৌরনিগম, সিইএসসি, দমকল, পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা থাকছেন।
কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরীর নেতৃত্বে তৈরি রাখা হচ্ছে পুলিশ বাহিনী। সম্প্রতি অতিবৃষ্টির ফলে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল কলকাতা ও শহরতলির এলাকাগুলিতে, তা নিশ্চিত করতে তৎপর পুলিশ ও প্রশাসন। চলছে কড়া পুলিশি বন্দোবস্ত।
এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে আসন্ন নিম্নচাপ পরিস্থিতির জন্য মোট ২২ টি বিপর্যয় মোকাবিলা দল (Disaster Management Group) প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। প্রত্যেক দলে তিন জন করে থাকবেন। এর মধ্যে ভবানীপুর ও কালীঘাট থানা এলাকার জন্য প্রতিটিতে দু’টি করে মোট চারটি বিপর্যয় মোকাবিলা দল তৈরি রাখা হচ্ছে। আলিপুর, ওয়াটগঞ্জ, একবালপুর, নিউ মার্কেট, পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকায় একটি করে বিপর্যয় মোকাবিলা দল থাকবে। উল্লেখ্য, এই থানা এলাকাগুলি ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যেই পড়ে। বাকি আটটি ডিভিশনে থাকছে একটি করে বিপর্যয় মোকাবিলা দল। পুলিশ ট্রেনিং স্কুল ও বডিগার্ড লাইন্সে পাঁচটি বিপর্যয় মোকাবিলা দল প্রস্তুত থাকবে। প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের ব্যবহার করা হবে।
বিপর্যয় মোকাবিলা দলগুলিকে মূলত গাছকাটার যন্ত্র, দড়ি, হাতুড়ি, রেন জ্যাকেট, ছাতা, গামবুট-সহ সব রকম ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে প্রত্যেক থানা ও ট্র্যাফিক গার্ডেও এই জিনিসগুলি মজুত রাখতে বলা হয়েছে। থানাগুলিকে বলা হয়েছে, তাদের এলাকায় যে বাড়িগুলি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে, এমন বাড়ির তালিকা তৈরি করে রাখতে। সেখানে থাকা মানুষদের বাড়ি থেকে সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে বলা হয়েছে।
এর পাশাপাশি কলকাতা পৌরনিগম ও সেচ দফতরের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে সব থানাকে।
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, আগামী ২৪ ঘণ্টায় নিম্নচাপটি শক্তি বাড়িয়ে ধীরে ধীরে উত্তর-পশ্চিমের দিকে অগ্রসর হয়ে ওড়িশা উপকূলের দিকে এগোবে। এই নিম্নচাপের ধাক্কা কাটতে না কাটতেই আরেকটি ঘূর্ণাবর্ত ২৬ সেপ্টেম্বর পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হবে। এই ঘূর্ণাবর্তের অভিমুখ উত্তর বঙ্গোপসাগরে দিকে।
এই জোড়া ঘূর্ণাবর্তের ধাক্কায় ২৬ তারিখ থেকেই প্রবল বর্ষণ শুরু হবে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় ১০ টি জেলায়। ২৬ ও ২৭-এর পর ২৮ তারিখ বৃষ্টির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। প্রথম দু’দিন হলুদ সতর্কতা জারি করা থাকলেও ২৮ সেপ্টেম্বরের জন্য এখন থেকেই কমলা সতর্কতা জারি করে দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
আরও পড়ুন : Weather Update: জোড়া ঘূর্ণাবর্তর ফাঁদে বাংলা! টানা ৩ দিন প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস, সতর্কতা জারি ১০ জেলায়