কলকাতা: করোনা আবহে সবথেকে মজবুত তালা যেন স্কুল-কলেজেই ঝুলেছে। একাধিক ক্ষেত্রের তালা খুললেও স্কুল-কলেজে পঠনপাঠন এ রাজ্যে কার্যত বন্ধ। মাঝে একবার স্কুল-কলেজ খোলা হলেও তা অচিরেই বন্ধ করতে হয় কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ এসে পড়ায়। এখন ফের শিক্ষাক্ষেত্রে তালা খোলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনও কাঁটা সেই করোনা। তাই প্রত্যেক পড়ুয়াকে ভ্যাকসিন দিতে তৎপর রাজ্য সরকার। কিন্তু ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য চাই আধার কার্ড। তাই ইতিমধ্যেই প্রত্যেক স্কুল পড়ুয়ার আধার কার্ড তৈরির কাজ শুরু করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর। পড়ুয়ারা যাতে দ্রুত ভ্যাকসিন পায়, এবং ক্লাসে বসে পড়াশোনার আবহ যাতে তাড়াতাড়ি ফেরানো যায়, সেই উদ্দেশ্যেই আধার কার্ড তৈরির কাজ সেরে রাখতে চাইছে বিকাশ ভবন।
কয়েকদিন আগেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে আধার অন্তর্ভুক্তিকরণের পাইলট প্রজেক্টের নির্দেশ দিয়েছে বিকাশ ভবন। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ১ অক্টোবর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এই পাইলট প্রজেক্ট। যেখানে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের আধার এনরোলমেন্টের কাজ হবে। ডিআই, এসআইদের তত্ত্বাবধানে এই কাজ সারবে স্কুলগুলি। কেন হঠাৎ আধার অন্তর্ভুক্তিকরণের তোড়জোড়? কেননা, পুজোর পরে স্কুল খোলার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই আধার কার্ডের অভাবে কোনও পড়ুয়া যাতে ভ্যাকসিন থেকে বঞ্চিত না হয়, তাই এই সিদ্ধান্ত। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কাছে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনিও জানান, স্কুল পড়ুয়াদের টিকাকরণ যাতে মসৃণভাবে করা যায় তার জন্যই দ্রুত আধার অন্তর্ভুক্তিকরণ শুরু হচ্ছে।
এর আগে স্কুল খোলা নিয়ে একটি সমীক্ষা করেছিল স্কুল শিক্ষা দফতর। যেখানে অভিভাবকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া এসেছিল। অনেক অভিভাবকই টিকা ছাড়া ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠাতে নিমরাজি ছিলেন। তাই নবম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত যে পড়ুয়ারা ভ্যাকসিন পাওয়ার যোগ্য, তাঁদের ভ্যাকসিনেশন যাতে হয়ে যায় সেই দিকটা মাথায় রেখেই দ্রুত আধার অন্তর্ভুক্তিকরণের কাজ সেরে ফেলতে চাইছে রাজ্য সরকার। ছোটদের ভ্যাকসিনেশন এখনও শুরু হয়নি। কিন্তু টিকাকরণ একবার শুরু হলে যাতে পড়ুয়ারা ভ্যাকসিন থেকে বঞ্চিত না হয়, সেজন্য অল্পবয়সী পড়ুয়াদেরও আধার কার্ড তৈরির কাজ করবে স্কুল শিক্ষা দফতর।
আরও পড়ুন: দুই ফুটফুটে মেয়ের মৃত্যু, আর্তনাদ, ক্ষতিপূরণ, রাজনীতি… ৪৮ ঘণ্টায় যা যা দেখল বান্ধবনগর
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করেছে রাজ্য সরকার। কয়েকদিন আগেই স্বাস্থ্য ভবন নির্দেশিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের ভ্যাকসিন দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই টিকাকরণের কাজ শুরু হবে। এর মধ্যেই স্কুল শিক্ষা দফতরের আধার অন্তর্ভুক্তিকরণের নোটিসে এককথায় পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, এই পদক্ষেপ স্কুল খোলার পক্ষেই। এ বিষয়ে বেথুন কলেজিয়েট গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী ঘোষ বলেন, “এটা দরকারি ছিল। সরকার যদি সঠিক উপায়ে এই কাজ করতে পারে, তাহলে সকলের অত্যন্ত উপকার হবে। ভ্যাকসিনটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই আধার কার্ডটাও জরুরি হয়ে পড়েছে। ডিআই এসআইদের তত্ত্বাবধানে এই কাজ সম্পন্ন হলে অত্যন্ত উপকার হবে ছাত্রছাত্রীদের। কিন্তু যথাযথ হওয়া প্রয়োজন।”
আরও পড়ুন: ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়ার অভিযোগ, আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি একাধিক শিশু, তুমুল বিক্ষোভ দুর্গাপুর হাসপাতালে