কলকাতা: ফের বিজেপি নেতা সজল ঘোষের বাড়িতে তল্লাশি চালাল পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে আটটা নাগাদ বিজেপি নেতা সজল ঘোষের (BJP Leader Sajal Ghosh) বাড়িতে সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে হানা দেয় পুলিশ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫-৬ জন পুলিশ কর্মী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজনের পুলিশের ইউনিফর্মে থাকলেও বাকি কয়েক জন সিভিল ড্রেসেই ছিলেন। প্রায় ৩০ থেকে ৪০ মিনিট ধরে চলে এই পুলিশি তল্লাশি। বিজেপি নেতা সজল ঘোষের বাবা প্রদীপ ঘোষের লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিভলবারের নথিও খতিয়ে দেখেন পুলিশকর্মীরা। যদিও কোনও কিছুই বাজেয়াপ্ত করা হয় নি। বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় খতিয়ে দেখা হয়।
গ্রেফতারের তিন দিন পর গত ১৭ অগাস্ট ব্যক্তিগত বন্ডে ছেড়ে দেওয়া হয় জামিন পেয়েছেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ। তাঁকে কমপক্ষে ৯ দিন হেফাজতে চেয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তাঁকে দু’দিনের পুলিশ হেফাজত দেওয়া হয়। গত শনিবার যখন সজলকে আদালতে তোলা হয় তখন কোর্ট চত্বরে নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মতো।
চতুর্দিকের গেট বন্ধ রাখা হয়। আদালতের বাইরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। এই পরিস্থিতিতেই টানটান উত্তেজনায় চলতে থাকে শুনানি। ধৃত সজল ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় একাধিক মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ ছিল, তিনি এলাকার এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্র দেখিয়ে তাঁর দোকান থেকে ২৫-৩০ হাজার লুঠ করেছেন। এর পাশাপাশি শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে।
রীতিমতো হিন্দি সিরিয়ালের মতো বিজেপি নেতা সজল ঘোষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার সূত্রপাত হয় মুচিপাড়া থানার অদূরে বিজেপির একটি ক্লাবের সংঘর্ষকে ঘিরে। বিজেপির অভিযোগ ছিল, বিনা প্ররোচনায় একদল তৃণমূল কর্মী সমর্থক ওই ক্লাবে ঢুকে নির্বিচারে মারধর করেছিল। কোনও কারণ ছাড়াই হামলা, ভাঙচুর হয়েছিল।
এই পরিস্থিতির মাঝেই সজল ঘোষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি ও ভাঙচুরের অভিযোগে দুটি এফআইআর দায়ের করেছিল তৃণমূল। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সজল ঘোষকে গ্রেফতার করতে যায় পুলিশ। তাঁর গ্রেফতারিটা রীতিমতো নাটকীয় ছিল। দরজা লাথি দিয়ে ভেঙে সজলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মুচিপাড়ায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করতে যান সজল ঘোষের স্ত্রী তানিয়া। তাঁর দাবি, অত্যন্ত বাজেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর স্বামীকে। টেনে হিঁচড়ে বাড়ি থেকে বার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সে সময় বাধা দিতে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁকে পুলিশ টেনে হিঁচড়ে সরিয়ে দেয় বলেও অভিযোগ। কিন্তু সে সময় কোনও মহিলা পুলিশ কর্মী সেখানে ছিলেন না।
এই বিষয়ে থানায় অভিযোগ আকারে জানাতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পুলিশ সেই অভিযোগ নিয়ে অস্বীকার করে বলে অভিযোগ করেছিলেন তানিয়া। তিনি এ ব্যাপারে এবার আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছিলেন। জেল থেকে বেরিয়ে সজল ঘোষও বলেছিলেন, “আমাকে লক আপে ঢুকিয়ে ওরা আমাকে আটকাতে পারবে না। আমি বিচার নিয়েই ছাড়ূব।” তিনি আদালতে যাবেন বলেও জানিয়ে রেখেছেন। আরও পড়ুন: মধ্যরাতে প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরনোর সময় যাত্রীর মোবাইল পকেটে পুরেছিলেন ‘পুলিশকর্তা’, যাত্রীর কথাতেই হাজতে তৃণমূল নেতা