মধ্যরাতে প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরনোর সময় যাত্রীর মোবাইল পকেটে পুরেছিলেন ‘পুলিশকর্তা’, যাত্রীর কথাতেই হাজতে তৃণমূল নেতা

Maldah: সেখান থেকে বাসে বাড়ি যাওয়ার জন্য শহরের রথবাড়ি মোড় যাওয়ার পথে তাঁদের পথ আটকান আকাশ ওরফে প্রিয়ার্ঘ সাহা ।

মধ্যরাতে প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরনোর সময় যাত্রীর মোবাইল পকেটে পুরেছিলেন 'পুলিশকর্তা', যাত্রীর কথাতেই হাজতে তৃণমূল নেতা
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 22, 2021 | 7:30 AM

মালদা: সবেমাত্র স্টেশনে নেমেছিলেন ওঁরা। প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরনোর আগেই তাঁদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন সাব ইন্সপেক্টর হিসাবে। আর বলেছিলেন মাদক পাচারের খবর রয়েছে, রুটিন তল্লাশি চলছে। যাত্রীরা তখন তো প্রায় ভ্যাবাচাকা! কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁদের মোবাইল গুলি দেখতে চেয়েছিলেন ‘সাব ইন্সপেক্টর’ আর মোবাইল পকেট থেকে বার করা মাত্রই তা নিয়ে ধাওয়া সাব ইন্সপেক্টর ও তাঁর দলবলের। মালদায় এবার ভুয়ো পুলিশ অফিসার সেজে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। আকাশ ওরফে প্রিয়ার্ঘ সাহা নামে ওই তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

জেলা থেকে রাজ্য প্রথম সারির নেতাদের সঙ্গে এক ফ্রেমে নিয়মিতই দেখা যেত আকাশকে। তৃণমূল নেতার এই কাণ্ডে শোরগোল পড়েছে দলের অন্দরেই । জানা গিয়েছে, শুক্রবার গভীর রাতে বেঙ্গালুরু থেকে মালদা টাউন স্টেশনে পৌঁছয় উত্তর দিনাজপুরের পাঁচ পরিযায়ী শ্রমিক। স্টেশনে নেমে শহরের রথবাড়ি মোড় থেকে বাস ধরতে যাচ্ছিলেন তাঁরা।

অভিযোগ, ঠিক সেই সময় স্টেশনের বাইরে অভিযুক্ত যুব তৃনমুল নেতা প্রিয়ার্ঘ সাহা নিজেকে ইংরেজ বাজার থানার সব ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে তল্লাশি শুরু করেন। অভিযোগ, তল্লাশির নামে প্রিয়ার্ঘ সাহা তাঁদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল ও কয়েক হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেন। তাঁর সঙ্গে আরও এক যুবক ছিলেন বলে দাবি ওই যাত্রীদের।

ওই ব্যক্তিরা ইংরেজবাজার থানার পুলিশের দ্বারস্থ হলে অভিযুক্ত যুব তৃণমূল নেতা প্রিয়ার্ঘ সাহাকে গ্রেফতার করে পুলিশ । উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা বকুল রায় নামে ওই ব্যক্তির বয়ান অনুযায়ী, বেঙ্গালুরু থেকে ইলেকট্রিক পিলার বসানোর কাজে গিয়ে ছিলেন পাঁচ মাস আগে। সেখান থেকে কাজ শেষ করে শুক্রবার দুপুরে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছন। পরে সেখান থেকে মালদা টাউন স্টেশনে রাত দুটো নাগাদ পৌঁছন।

সেখান থেকে বাসে বাড়ি যাওয়ার জন্য শহরের রথবাড়ি মোড় যাওয়ার পথে তাঁদের পথ আটকান আকাশ ওরফে প্রিয়ার্ঘ সাহা । নিজেকে ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে এই কাণ্ড ঘটান। অভিযুক্তকে এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলেন, ‘প্রচুর পরিমাণে মাদক পাচারের খবর আছে পুলিশের কাছে । তাই এই তল্লাশি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁদের পাঁচটি মোবাইল ফোন ও কয়েক হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেন অভিযুক্ত ও তাঁর এক সঙ্গী’ ।

কিন্তু বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হয় যাত্রীর। পরে ইংরেজবাজার থানার দ্বারস্থ হলে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। এদিকে এই ঘটনার পর রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদার রাজনৈতিক মহলে । ঘটনা প্রসঙ্গে জেলা বিজেপির সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল বলেন, “এ রাজ্যে তৃণমূল নেতারা এতো নীচে নামবে তা ভাবা যায় না । এই চিত্র এখন রাজ্যের সর্বত্র । অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে জেলা থেকে রাজ্য বহু তাবড় তাবড় তৃণমূল নেতার সাথে এক ফ্রেমে দেখা গেছে ।” এই ধরণের অপরাধীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতেই কার্যত ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করছেন জেলা নেতৃত্ব ।একাধিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি কেউই। যদিও গোটা ঘটনা নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানান, একটি ছিনতাইয়ের ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি । এই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । গোটা ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে। আরও পড়ুন: ‘ব্রাত্য বসুকে আফগানিস্তান পাঠানো হোক,’ ‘দিদি’র কাছে ‘আবেদন’ দিলীপের